শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না, কোথায় নেই স্বাস্থ্যবিধি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিবেশী দেশ ভারতে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রায় পিক টাইম চলছে।এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরমধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই দেশের দোকান-শপিং মলগুলো খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে ঈদকে সামনে রেখে লোকসানের কথা বিবেচনা করেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বালাই নেইকিন্তু কোথায় সেই স্বাস্থ্যবিধি? আর কোথায় সামাজিক দূরত্ব? রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই এই বিষয়টি উপেক্ষিত। এক দিকে উপচে পরা ভিড় অন্যদিকে তাদের এমন উদাসিনতা দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে এখন করোনার প্রকোপ চলছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটি অংশ মাস্ক ব্যবহার করলেও সরকারের জুড়ে দেয়া স্বাস্থ্যিবিধির তোয়াক্কাই করছেন না তারা।জেলায় জেলায় লকডাউন, মানছেন না অনেকেই | 519948|| Bangladesh Pratidinগতকাল শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা করতে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচে পরা উপস্থিতি। তবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে শনিবার (০১ মে) থেকে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর হওয়ার কথা থাকেলেও আজও মার্কেট-শপিংমলগুলোর একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়,বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা ঠিকভাবে মাস্ক পরছেন না। একজন আরেকজনের গায়ে গা লাগিয়েই করছেন ঈদের কেনাকাটা। অনেকেই ছোট ছোট বাচ্চা নিয়েও এসেছেন। শপিং মলগুলোর প্রবেশ পথে কিছুটা মনিটরিং ব্যবস্থা থাকলেও ভেতরে তার বালাই নেই। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মার্কেটগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তৎপরতাও লক্ষ্য করা যায়নি।বিধিনিষেধ ভেঙে বড় ঝুঁকির দিকে বাংলাদেশ? | বিশ্ব | DW | 04.05.2020স্বাস্থবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে, ক্রেতারা বিভিন্ন রকম অজুহাত দেখাচ্ছন। কেউ বলেছন, সন্তানের জোরাজুরিতে এসেছেন তো কেউ বলেছন ঈদের সময় বাবা মাকে কিছু না দিলে কেমন দেখায়। আবার অনেকেই অতি প্রয়োজনের কথা উল্লেখ্য করেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেন জানেত চাইলে তারা বলেন, দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে থাকা কষ্টকর।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন আরিটিভি নিউজকে বলেন, আমাদের শক্ত নির্দেশনা দেয়া আছে, সবাই যেনো যথাযথভাবে মাস্ক পরে ব্যবসা পরিচালনা করেন। এই নির্দেশনা যারা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে মার্কেটে সমিতি আছে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এটি সম্ভব না হলে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী আছে, তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, সেক্ষেত্রে আমাদের কোন আপত্তি নাই।যে যেখানে আছে, সেখানেই পরীক্ষার ব্যবস্থা দরকার | সমাজ সংস্কৃতি | DW |  26.05.2020তিনি আরও বলেন, তবে আমরা কিন্তু লক্ষ্য করছি ৯৫ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেই চলছে। দুই একজন পরছেন না তাদের কারো কারো হয়তো শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, কারো এলার্জির সমস্যা আছে। তবে কেউ কেউ উদাসীন সেটিও আমরা অস্বীকার করছি না। প্রত্যেকটা মার্কেটের গার্ডকে বলা আছে মাস্ক ছাড়া যেন কেউ মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে।

স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্র মাঠ পর্যায়ে দোকান মালিক সমিতির পদক্ষেপ কি? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেক মার্কেটে প্রত্যেক মহল্লার দোকানগুলোর জন্য আলাদা আলাদা সমিতি আছে তাদের দায়িত্ব হলো মাঠ পর্যায়ে দেখা। তাই তাদেরকেই আমরা কঠোরভাবে বলছি, নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক তারা আসলে ব্যবস্থা নিচ্ছেও। এর প্রমাণ হলো, রাজধানীর গাউসিয়া মার্কেটে নির্দেশনা না মানায় দু’টি দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।শ্রমিকেরা কারখানায় ফিরছেন, সামাজিক দূরত্ব মানছেন না | প্রথম আলোপুলিশ বলছে, দোকান মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে নিয়মিত জানতে চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলের সামনে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। এছাড়া পেট্রোলিং ব্যবস্থাও রয়েছে।

উল্লেখ্য, লকডাউনের শুরু থেকে কয়েকদিন মার্কেট ও শপিং মল বন্ধ রাখার পর ২৫ এপ্রিল থেকে সব দোকান-শপিং মল খুলে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিং মল খোলা রাখার কথা বলা হলেও পরে সময় বাড়িয়ে রাত ৮টা করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর