লকডাউনে শ্রমজীবীদের জন্য অর্থ ও রেশনিং চালু করুন: নজরুল ইসলাম খান

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা মহামারী সময়কালে শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালুর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শনিবার (১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের জন্য রেশনিংয়ের দাবি করেছিলাম। এটা নতুন কোনো দাবি নয়, বৃটিশ আমল থেকে আছে। আমরা নিজেরা্ যেসব কারখানায় চাকুরি করেছি সেসব কারখানায় রেশনিং শপ ছিলো, ন্যায্যমূল্যে দোকান ছিলো। সব সময় যদি নাও হয়, করোনার মতো দুযোর্গকালে শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনিং ও ন্যায্যমূল্যের দোকান করা উচিত। যাতে করে তারা তাদের সীমিত আয়ের মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করতে পারে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা এটা ন্যায্য মনে করেন, আমি বিশ্বাস করি শ্রমিক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদ এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। শ্রমিক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদের আমরা সবাই আছি, আমরা শ্রমিক দল আছি, জাতীয় শ্রমিক লীগ আছে, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র –বহু সংগঠন আছে। আমরা সবাই মিলে একই দাবিতে আন্দোলন করতে পারি, আমরা অতীতে করেছি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, করোনা চলছে এই সময়ে মানুষ অনেক কষ্টে আছে, শ্রমিকরা কষ্টে আছে, বিভিন্ন পেশার মানুষরা কষ্টে আছে। এই সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের কথা বলছি না। আমরা বলছি, এই কোবিডেও সবার প্রতি সমান আচরণ, সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, রাষ্ট্রকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে।

“কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ন্যায্য মজুরীর দাবি, সময়মতো মজুরীর দাবিতে, অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এবং রমজানের মধ্যে একটু সময় কমানোর দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের শ্রমিকদের জীবন দিতে হচ্ছে। এটা আমাদের প্রত্যাশিত ও গ্রহণযোগ্যও নয়।”

তিনি বলেন, আমরা সম্প্রতি দেখলাম যে, আমাদের ব্যাংকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য করোনায় মারা গেলে একটা পরিমান নির্দিষ্ট করা হয়েছে যে তারা ক্ষতিপুরণ পাবে। আমরা খুশি হয়েছি যে অন্তত: একটা প্রতিষ্ঠানে এরকম একটা আইন, একটা নিয়ম করা হয়েছে। কিন্তু যারা মূল উতপাদনশীল শ্রমিক, যারা বেশি পরিশ্রম করে আরো, যারা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে সেইসব শ্রমজীবী মানুষের জন্য একই নিয়ম হবে না কেনো? কেনো সাংবাদিক বন্ধুদের জন্য একই নিয়ম হবে না, কেনো আমার পুলিশ ভাইদের জন্য একই নিয়ম হবে না।

“অন্যরা যদি ৫০ লক্ষ টাকা পায়, ২৫ লক্ষ টাকা পায় করোনায় মারা গেলে, অন্যরা কেনো কম পাবে কিংবা পাবে না। স্বাধীন রাষ্ট্রে এব্যাপারে নানারকম নিয়ম থাকবে কেনো? বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠান যদি তার অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য যা উচিত মনে করে, রাষ্ট্র সারাদেশের শ্রমিকদের জন্য তা উচিত মনে করবে না কেনো? কাজে্ই আজকে এই মে দিবসের সমাবেশ থেকে দাবি করছি সব শ্রেণির শ্রমিকদের জন্য কোবিডে আক্রান্ত হলে তাদের সুচিকিৎসা এবং মারা গেলে তাদের জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য যে নিয়ম করা হয়েছে সেই ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক।”

শ্রমিকদের ৮ ঘন্টার কর্মের স্বীকৃতি প্রদান, তাদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকারের নিশ্চয়তার পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও জানান নজরুল ইসলাম খান।

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শ্রম বিষয়ক সহ সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মোল্লা, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মিয়া মিজানুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, সুমন ভুঁইয়া, আমীর খসরু, মিরাজ হোসেন, খন্দকার জুলফিকার মতিন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর