যৌন নির্যাতনের বিচার না পেয়ে দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মেয়ের যৌন নির্যাতনের বিচার না পেয়ে দুই ছেলে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন মা মাহফুজা খাতুন (৩২) নামের এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া বাজারের পাশে নিজ বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময়ে, ঘরের মধ্যে মা মাহমুদা খাতুনের (৩০) ঝুলন্ত মরদেহ, ছেলে মাহফুজ (৯) ও মোহনা খাতুনের (৪) ঘরের মেঝে থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাহমুদা খাতুনের স্বামী শিমুল পেশায় একজন ট্রাকচালক। তিনি বাগেরহাট জেলায় কাজ করেন। মাহফুজা খাতুন ওই গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার শিমুল হোসেনের স্ত্রী। নিহত দুই শিশু হলো, শিমুল হোসেনের ছেলে মাহফুজ (৯) ও মেয়ে মোহনা (৫)।

শিমুল হোসেনের পিতা আব্দার আলী জানান, তিন দিন আগে খেলা করার সময় স্থানীয় লাল্টুর ছেলে হৃদয় (১৪) শিশু মোহনাকে যৌন নির্যাতন করে। মোহনা বিষয়টি বাড়ি এসে মাকে জানালে মাহফুজা স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফিজুলের কাছে বিচার চান। তখন সাফিজুুল সামনে নির্বাচন উল্লেখ করে কয়েকদিন পরে বিচারের আশ্বাস দেন। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি মামলার পরামর্শ দেন। পরে মাহফুজা তার কাছে (আব্দার আলী) মামলা করার কথা বললে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ, মামলার খরচ চালাবো কিভাবে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি (আব্দার আলী) কাজে গেলে মাহফুজা দুই সন্তানকে মেরে নিজেও আত্মহত্যা করেছে।

স্থানীয় অন্য একব্যক্তি জানান, কয়েক দিন আগে প্রতিবেশী লাল্টুর ছেলে হৃদয় (১২) শিশু মোহনা খাতুনকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে শিশুটি তার মাকে এ ব্যপারে জানায়। এতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাফিজুল ইসলাম শাফিকে বিচারের জন্য বলেন মোহনার মা মাহমুদা। পরে ইউপি সদস্য তাকে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণের পর বিচার করার আশ্বাস দেন।

কলারোয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। মাহমুদা বেগমের ঝুলন্ত ও শিশু দুটির মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বা এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা, সে ব্যাপারে এখনো কিছু জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে তদন্ত করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর