কিশোরগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, আহত ৩৩

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকে ঘিরে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) বেলা ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষের সময় শহরের পুরানথানা মোড় ও একরামপুর মোড়সহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের পাথর ও ইট-পাটকেলের জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে এক পরিদর্শকসহ পুলিশের ৩ সদস্য এবং বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

কেন্দ্রিয় বিএনপির পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছাড়াও রোববার (২৮ মার্চ) বিএনপির জেলা ও সদর উপজেলা শাখার দুটি কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুর ১২টায় জেলা শহরের রথখলা ময়দান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করার কর্মসূচি ছিল।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের বয়লা এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. ইসরাইল মিয়ার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয়।

অন্যদিকে শোলাকিয়া এলাকা থেকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম আশফাকের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বের করা হয়।

পৃথকভাবে মিছিল দু’টি পুরানথানা এলাকার দিকে আসার সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। এরপর পরই পুলিশের সাথে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রায় দেড় ঘন্টা সময় ধরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে।

এ সময় শোলাকিয়া-পুরানথানা এবং একরামপুর-পুরানথানা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর পাথর ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে।

দফায় দফায় পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে বেলা দেড়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম জানান, করোনা পরিস্থিতিতে সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে পুলিশের অনুমতি ছাড়া হাজার খানেক বিএনপি নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল বের করে। বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ পরিস্থিতিতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪৮০ রাউন্ড গুলি ও ৩০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষে পরিদর্শক (ইন্টিলিজেন্স এন্ড কমিউনিটি পুলিশিং) জয়নাল আবেদীনসহ পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।

অপরদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম জানান, পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া ও সহ-সভাপতি সায়েদ সুমন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ফয়সাল হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রুবেল, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন এবং যুগ্ম আহবায়ক এমদাদ হোসেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর