তাকবির হত্যা: ছাত্রলীগ নেতা রউফকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শৃঙ্খলাপরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাত ও মারপিটে আহত জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবির ইসলাম খান (২৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবদুর রউফ। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবদুর রউফকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

আবদুর রউফকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়।

তিনি বলেন, শৃঙ্খলাপরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল জেলা কমিটি আবদুর রউফের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। সে কারণে রাতে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাত ও মারপিটে আহত তাকবির ইসলাম খান মঙ্গলবার বিকালের দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান।

গত ১১ মার্চ রাতে শহরের সাতমাথা এলাকায় এ হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছিলেন।

সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে; পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ছোটভাই তৌফিকের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ হামলাসংক্রান্ত মামলায় হত্যার ধারা যোগ হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার ধুনটের শহীদ মিনার ও মুজিবমঞ্চ চত্বরে উপজেলা ছাত্রলীগ একই সময় সমাবেশের ডাক দেয়। এ নিয়ে সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ওই দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন।

ধুনটে যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাকবির ইসলাম খানের মোটরসাইকেলের সঙ্গে জাহিদ হাসানের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে দুই নেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

ধুনট থেকে বগুড়া শহরে ফেরার পর রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ ও তার লোকজন জাহিদ হাসানের পক্ষ নিয়ে তাকবির হাসান ও তার সমর্থকদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বাকবিতণ্ডায় জড়ান।

একপর্যায়ে রউফের সমর্থকরা তাকবির ও তার পক্ষের লোকদের ওপর হামলা করলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় তাকবিরকে ছুরিকাঘাত ও অন্যদের মারপিট করা হয়েছে। গুরুতর আহত তাকবির ইসলামকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত তাকবির সমর্থক বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী শান্ত, ইমন, সাজিদ ও হাবিব এবং রউফ গ্রুপের জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ হাসান, ছাত্রলীগকর্মী সানজিদ, দুলাল ও রাজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৩ মার্চ দুপুরে বগুড়া শহরের মালতিনগর দক্ষিণপাড়ার জহুরুল ইসলাম দুলালের স্ত্রী ও তাকবিরের মা আফরোজা ইসলাম সদর থানায় ছাত্রলীগ সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

নামীয় অন্য আসামিরা হলেন— জাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন, মো. তারেক, বিধান চন্দ্র মোহন্ত মো. নিশাদ ও মো. আরমান।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাকিব হাসান বলেন, শহরের সাতমাথায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনসমক্ষে ছাত্রলীগ নেতা তাকবির ইসলাম খানের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রউফ, জাহিদ হাসান ও তাদের সহযোগীরা।

শুধু আবদুর রউফকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করলে হবে না। অপর আসামি জাহিদ হাসানকেও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর