মাথায় চুল গজাতে কালোজিরা ব্যবহার করবেন যেভাবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চুল ছাড়া চেহারার সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। তাই যাদের মাথা টাক অথবা চুল কম; তারাই বুঝতে পারেন চুল না থাকার কষ্ট কতটা! অনেকেই এখন হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা উইগ ব্যবহার করে টাক ঢেকে রাখেন।

যদিও এসব উপায় বেশ ব্যয়বহুল এবং ঝামেলারও বটে। তার চেয়ে যদি প্রাকৃতিক উপায়ে টাক মাথায় দ্রুত চুল গজানোর ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে কেমন হয়? অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে, এটা-সেটা তো কতই ব্যবহার করলাম; তবুও চুল গজালো না মাথায়!

আসলে সবটাই ধৈর্যের বিষয়। নিয়মিত চুল ও স্ক্যাল্পের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও ঘুম সবই প্রয়োজন রয়েছে চুল গজানোর ক্ষেত্রে। যখন কারো মাথার চুল পড়তে পড়তে টাক হওয়া শুরু হয়; তখনই তার উচিত জীবনযাত্রা পরিবর্তন করা।

jagonews24

শারীরিক বিভিন্ন রোগের কারণে চুল দ্রুত পড়তে থাকে। তাই টাক মাথায় নতুন চুল গজাতে ব্যবহার করা উচিত ভেষজ উপকরণ। তেমনই এক উপাদান হলো কালোজিরা।

মহৌষধ বলা হয়ে থাকে কালোজিরাকে। এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি জানা আছে। জেনে নিন কীভাবে কালোজিরা ব্যবহার করবেন নতুন চুল গজাতে-

কালোজিরার তেল: কালোজিরার তেল ব্যবহারে নতুন চুল গজায়। চুলের ফলিকগুলো শক্তিশালী করে। এই তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে। এ ছাড়াও মাথার ত্বকের শুষ্কতা কমায়, যার ফলে দ্রুত চুল পড়া বন্ধ হয়।

ব্যবহারের জন্য কালোজিরা তেল এক হাতের তালুতে নিন। এবার আরেক হাতের আঙুলের সাহায্যে মাথার চুল কম আছে এমন অংশে অথবা টাক স্থানে ১৫ মিনিট রেখে ম্যাসেজ করুন। আধা ঘণ্টা পরে ধুয়ে ফেলুন।

আপেল সিডার ভিনেগার এবং কালোজিরার তেল: চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ও খুশকিমুক্ত করতে আপেল সিডার ভিনেগারের তুলনা নেই। যদি আপনি এটি কালোজিরা সঙ্গে ব্যবহার করেন; তাহলে এর পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যাবে। চুলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এ মিশ্রণটি।

এজন্য আস্ত কালোজিরা পানিতে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে নিন পানিটুকু। এরপর এতে ভিনেগার মিশিয়ে চুলে ও স্ক্যাল্পে ব্যবহার করুন। কয়েক ঘণ্টা রেখে বা পরের দিন শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন এ পদ্ধতি অনুসরণ করুন ২ মাস।

jagonews24

জলপাই এবং কালোজিরা তেল: এ দুই তেলে পাওয়া অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল যৌগ। যা চুল পড়া রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ব্যবহারের জন্য একটি পাত্রে জলপাই এবং কালোজিরার তেল মিশিয়ে নিন।

এবার মাথার টাক বা কম চুল রয়েছে এমন স্থানে লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন। এ তেলের মিশ্রণ নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল পড়ার সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

মেহেদি ও কালোজিরার প্যাক: চুলের ক্ষেত্রে মেহেদির উপকারিতা সবারই কমবেশি জানা। কালোজিরা প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। এজন্য মাথার ত্বকের ব্যাধি এবং চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এ প্যাক।

ব্যবহারের জন্য মেহেদি গুঁড়ো এবং কালোজিরার গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। আধা ঘণ্টা রেখে দিন এবং পরে শাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন।

নারকেল তেল এবং কালোজিরা: নারকেল তেলে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। যা মাথার ত্বকের বিভিন্ন ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যদি কোনো চর্মরোগের কারণে আপনার চুল পড়তে থাকে; তাহলে কালোজিরার সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

jagonews24

এজন্য ১ টেবিল চামচ কালোজিরার গুঁড়ো বা তেলের সঙ্গে ১ চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। আপনি চাইলে মধুও যোগ করতে পারেন। এ মিশ্রণটি টাকের স্থানে অথবা চুলের গোড়া থেকেআগা পর্যন্ত ব্যবহার করুন।

এরপর হালকা গরম তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন প্রায় ২০ মিনিট। সপ্তাহে কমপক্ষে একবার এ প্যাকটি ব্যবহার করুন। টাক পড়া নিরাময়ের পাশাপাশি, মিশ্রণটি আপনার দীর্ঘদিনের টাকেও চুল গজাতে সাহায্য করবে।

কালোজিরার তেল এবং লেবুর রস: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবুর রস স্বাস্থ্য-ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। কালোজিরা তেলের সঙ্গে যদি আপনি লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে ব্যবহার করেন; তবে দ্রুত টাক মাথায় নতুন চুল গজাবে।

কালোজিরায় থাকা অক্সিডেন্ট চুল পড়া রোধ করে। চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় এবং চুল পড়া নিরাময় করে। টাকের স্থানগুলোতে এ মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর চুল শুকিয়ে গেলে স্ক্যাল্পে কালোজিরার তেল ব্যবহার করুন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর