হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে কৃষি প্রণোদনার আওতায় সূর্যমুখীর চাষ করেছেন এখানকার কৃষকরা। এসব জমিতে ফুল ফুটতে শুরু করেছে।
তবে পুরোদমে ফুল আসতে আরও কয়েকদিন লাগবে। কিন্তু ইতোমধ্যে নয়নাভিরাম এ ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দর্শনার্থীরা ভীড় জমাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সূর্যমুখী চাষাবাদ সংক্রান্ত সকল ধরনের পরামর্শ প্রদান করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
সরজমিনে উপজেলার আঙ্গিয়াদী ব্লকের আদিত্যপাশা গ্রামে বিলভরা প্রেমনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একসঙ্গে আট বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুল ফুটে আছে। জমির তিন দিকে পানি।
এমন পরিবেশে সূর্যমুখী ফুল দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়েছে। এখনো পুরোদমে ফুল আসেনি। কিন্তু এরই মধ্যে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত।
বিকাল হতেই আশপাশসহ দূর-দূরান্তের লোকজন ছুঁটে আসছেন। সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন। স্মৃতিময় করে রাখতে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।
একেকটি সূর্যমুখী বাগান ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।
সূর্যমুখী চাষীরা জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। দিন যাচ্ছে আর ফুলের সংখ্যা বাড়ছে। আকারও বড় হচ্ছে।
শুরুতে কিছুটা চিন্তায় থাকলেও এখন বেশ উৎফুল্ল। দেখতেই যেন মন ভরে যায়। প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থীদের সংখ্যা।
তারা বলেন, বিড়ম্বনা হলেও তাদের বারণও করতে পারছি না। তবে যেন জমির ক্ষতি না হয় সেজন্য দর্শনার্থীদের সর্তক করে দেয়া হচ্ছে।
চাষী রুক্কুন উদ্দিন বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহাগ ভাইয়ের পরামর্শে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করেছি। বীজ বিনামূল্যে পেয়েছি।
চাষাবাদে যে খরচ হয়েছে আর জমিতে যে পরিমাণ ফলন এসেছে তাতে আমরা এর বীজ বিক্রি করে লাভের আশা করছি।
মিজানুর রহমান নামের অপর এক সূর্যমুখী চাষী বলেন, সূর্যমুখীর ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছি। পাশাপাশি এর বীজের ভাল কদর রয়েছে। যা বিক্রি করে আমরা আর্থিকভাবেও লাভবান হব। অন্যান্য কৃষকেরাও সূর্যমূখী চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
আঙ্গিয়াদী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ বলেন, ‘এ ব্লকে ৮৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। যে সমস্ত জমিতে রোপা আমন পরবর্তী পতিত রেখে পাট চাষ করা হত, সেই পতিত জমিগুলোতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। এতে বাড়তি একটি ফসল পাওয়া যাবে।
৫, ১০, ১৫ বিঘা এভাবে ব্লক আকারে বাস্তবায়ন করেছি। যার কারণে দর্শনার্থীদের দ্বারা খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
কৃষকরা যাতে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারে সেজন্য তাদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাসান আলামিন কিশোরগঞ্জ নিউজকে বলেন, ‘এ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি।
অন্যান্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আগামীতে এ উপজেলায় এর আবাদ বাড়বে। তৈল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে সয়াবিন আমদানি কমে আসবে বলে মনে করছি।’