কেউ নাগরিকত্ব হারাবে না: অমিত শাহ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শেষ হলেই ভারতে শুরু হবে সিএএ। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গে মতুয়াদের তীর্থভূমি উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগরে এক জনসভায় ভাষণদানকালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আরো বলেন, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে জাতীয় কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল। সিএএ চালু হলে ভারতের মুসলিমদের নাগরিকত্ব যাবে না। এর মাধ্যমে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে।

এদিন ঠাকুরনগরের সভায় হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুর আর বড় মাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকানোর ক্ষমতা নেই আর শরণার্থীদের সম্মান দিতে ২০১৯ সালে আমরা নাগরিকত্ব আইন এনেছি। করোনা ভাইরাসের জন্য আইন প্রণয়নের কাজ পিছিয়ে গেছে। তারমধ্যে দিদি (মমতা) বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে এই আইন বাস্তবায়ন করতে দেবেন না। তিনি দেখে নেবেন কীভাবে আইন বাস্তবায়ন হয়। দিদি, এটা ভারতীয় সংসদের আইন আপনি আটকাবেন কীভাবে?

আপনার অনুপ্রবেশ ঠেকানোর ক্ষমতা নেই। যেটা ভারতীয় জনতা পার্টির আছে। ৭০ বছর ধরে মতুয়ারা নাগরিকত্ব পায়নি, এবার পাবে।

এদিন মতুয়া উন্নয়নে একাধিক পরিকল্পনা ঘোষণা করে অমিত শাহ বলেন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে।

এর সঙ্গে ঠাকুরনগরের রেলস্টেশনের নাম ‘শ্রীধাম ঠাকুরনগর’ রেলস্টেশন করা হবে বলে ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল মুসলিম সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের ভুল বোঝাচ্ছে, যে নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়ন হলে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল হবে। যারা ভুল বুঝছেন আমি সেসব সংখ্যালঘু নাগরিকদের বলছি, এই আইন একজনও সংখ্যালঘু ভাই-বোনের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে না। আমি কথা দিচ্ছি, এদের ফাঁদে পা দেবেন না।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে পাড়ি জমানো হিন্দু, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন, শিখ ও বৌদ্ধদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সিএএ পাস হয় ভারতের সংসদে।

অমিত শাহ বলেন, মোদি সরকার ২০১৮ সালে নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে, ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে এর বাস্তবায়ন স্থগিত করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘মমতা দিদি বলেছিলেন যে আমরা ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তিনি সিএএর বিরোধিতা শুরু করে বলেছিলেন যে তিনি কখনই এর অনুমতি দেবেন না। বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা পূরণ করে। আমরা আইন করেছি এবং শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবে।’

‘করোনা টিকাদান কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরপরই সিএএর অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে,’ যোগ করেন অমিত শাহ।

ঠাকুরনগরে অনেক মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস এবং এটি বিজেপির একটি শক্ত ঘাঁটি। মতুয়ারা মূলত পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা ছিলেন। দেশভাগের সময় এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর তারা ভারতে পাড়ি জমান। তাদের অনেকেই ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেও, মতুয়াদের একটা বড় অংশ পায়নি।

এ কারণে, আজ ঠাকুরনগরে সিএএ সম্পর্কে অমিত শাহের বক্তব্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকেই।

অমিত শাহ বলেন, ‘এ বছর এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য বিধানসভা নির্বাচনের পরে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন না। তাই, তিনি সিএএ বাস্তবায়নের বিরোধিতাও করতে পারবেন না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর