হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের ফুটবল খেলার উন্নয়নে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরছি। আশা করি, এগুলো অনুসরণ করা হলে দেশে ফুটবলের মান উন্নত হবে। উদাহরণের মাধ্যমে বলি, বার্সেলোনা ক্লাবকে ১৫ দিনের জন্য বাংলাদেশে আনা হলো। তাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলোয়াড় যোগ করে দুটি টিম গঠন করা হলো। বার্সেলোনা ‘এ’ টিম ও বার্সেলোনা ‘বি’ টিম। এ দুটি টিম দেশে তিনটি ম্যাচ খেলবে। বার্সেলোনা ‘এ’ টিমে ১১ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ৬ জন এবং বার্সেলোনার ৫ জন খেলোয়াড় খেলবেন। ‘বি’ টিমেও ১১ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ৬ জন, বার্সেলোনার ৫ জন খেলবেন। খেলা চলাকালে বাংলাদেশি খেলোয়াড় পরিবর্তন করা হলে বাংলাদেশি খেলোয়াড় মাঠে নামবেন এবং বার্সেলোনার খেলোয়াড় পরিবর্তন করা হলে বার্সেলোনার খেলোয়াড় মাঠে নামবেন। আমি এখানে ১৫ দিনের কথা বলেছি, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি কম-বেশি করা যেতে পারে। বার্সেলোনা ক্লাবকে আনার পরের মাসে আনতে হবে রিয়াল মাদ্রিদ, এরপরের মাসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। উদাহরণস্বরূপ এখানে তিনটি ক্লাবের নাম দিলাম। আমন্ত্রণ করা হলে বড় যে ক্লাব আসতে চাইবে, তাদের আনতে হবে। প্রতিটি টিমকে এনে ৩ বা ৫ ম্যাচের সিরিজ খেলাতে হবে।
এনজিও কার্যক্রমের মাধ্যমেও ফুটবলের উন্নয়ন করা যায়। একটা উদাহরণ দিই। ‘ক’ এনজিওর মাধ্যমে তিন বছরের একটি প্রকল্প নেওয়া হলো। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘ক’ আটটি বিভাগে আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দেবে তিন বছর। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে দু-ধরনের দুটি আলাদা জার্সি দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের সময় কোচ যাকে যে জার্সি পরার নির্দেশ দেবেন তারা সেই জার্সি পরবেন। খেলোয়াড়দের বেতনও দিতে হবে। প্রতিবছর এ আটটি টিমের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে টেলিভিশনে প্রচার করতে হবে। তিন বছর পর ভালো ফল এলে নতুন প্রকল্প নিতে হবে। এভাবে হাইস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রজেক্ট পরিচালনা করতে হবে। ক্লাব ও জেলা ভিত্তিতে বয়সভিত্তিক খেলার আয়োজন করতে হবে। এতে নতুন খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করতে হবে। যে দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দল কোনোদিন খেলেনি বা কম খেলেছে, সে দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনতে হবে। একটি দলের সঙ্গে ৩ বা ৫ ম্যাচের সিরিজ খেলানো যেতে পারে। বয়সভিত্তিক ক্লাব কাপের আয়োজন করতে হবে। অনূর্ধ্ব ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ১৯ ক্লাব কাপ আয়োজন করে প্রতিটি খেলা টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। ফুটবলের উন্নয়নে এক বা একাধিক পরামর্শক নিয়োগ দিতে হবে। শুধু কাগজে-কলমে নিয়োগ দিলে হবে না, পরামর্শকের মতামত গুরুত্ব দিয়ে কাজে লাগাতে হবে।
ইউরোপে ফুটবল বেশি জনপ্রিয়; কিন্তু এশিয়ায়, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রিকেট এখন বেশি জনপ্রিয়। আমাদের দেশে ফুটবলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ কম হওয়ায় ফুটবল জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। ক্রিকেটের মতো ফুটবলেও দ্বিদেশীয় ও ত্রিদেশীয় সিরিজ চালু করা হলে ফুটবল তার হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পাবে। আশা করি, দেশের ফুটবল কর্তব্যক্তিরা এ মতামতকে গুরুত্ব দেবেন।