হোসেনপুরে অধ্যক্ষ আমিনুল হত্যায় পুত্রের মৃত্যুদণ্ড, পিতার যাবজ্জীবন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চাঞ্চল্যকর মাদরাসা অধ্যক্ষ আমিনুল হক হত্যা মামলায় মানিক মিয়া (২৫) নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং তার পিতা মো. নূরুল করিম (৫০) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ে পিতা ও পুত্র প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে এবং অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে নিহতের পরিবারকে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসমি মো. নূরুল করিম আদালতে উপস্থিত থাকলেও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত তার পুত্র মানিক মিয়া পলাতক রয়েছে।

মো. নূরুল করিম হোসেনপুর উপজেলার জিনারী গ্রামের মৃত ইন্নছ আলী ইদুর পুত্র।
অন্যদিকে নিহত আমিনুল হক পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মহেষকুড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন সরকারের ছেলে এবং মহেষকুড়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকালে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে সীমান্তবর্তী মহেষকুড়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ হাজী আমিনুল হকের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে রক্সিকে মারপিট করে মানিক মিয়া ও তার পিতা মো. নূরুল করিম। পরে রক্সিকে তারা তাদের বাড়ি হোসেনপুরের জিনারি গ্রামে আটকে রাখে।

খবর পেয়ে অধ্যক্ষ আমিনুলসহ তার লোকজন ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে পিতা-পুত্র মিলে অধ্যক্ষ আমিনুল হককে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর ঢাকায় রেফার্ড করা হলে সেখানে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনদিন পর ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমিনুল হকের মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই মো. ফজলুল হক বাদী হয়ে ১৯ ডিসেম্বর চারজনের নামাল্লেখ করে হোসেনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৮) দায়ের করেন।

পরে তদন্তকালে দুই আসামী সোহেল মিয়া ও জীবন মিয়াকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে ডিবি তদন্ত করে।

সবশেষে ২০১১ সালের ১৮ মে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মুশফিকুর রহমান তদন্ত শেষে আসামি মানিক মিয়া ও তার পিতা নূরুল করিমের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সাক্ষ্য-জেরায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ ইমাম এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট একেএম মঞ্জুরুল ইসলাম জুয়েল ও অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ মামলাটি পরিচালনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর