বন্দিশিবিরে একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করছেন উইঘুর নারীদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চীনের জিনজিয়ান অঞ্চলের ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবির নামে সংখ্যালঘু ১০ লাখের বেশি উইঘুর নারী-পুরুষকে বন্দি করে ব্যাপক নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিরাতেই বন্দিশিবির থেকে বাছাই করে উইঘুর নারীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, এমন কোনো কক্ষে। সেখানে দুই থেকে তিন ব্যক্তি পালাক্রমে তাদের ধর্ষণ করে।খবর বিবিসির।

সেখানকার ব্যবস্থা এতই কঠোর যে, শিবিরের ভেতরে কী ঘটে, তার খবরাখবর তেমন বাইরে আসে না।

উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি সন্ত্রাসী হামলার জেরে ২০১৪ সালে জিনজিয়ান সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।  ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা যায়, এর পরই তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের উইঘুরদের ব্যাপারে চরম নীতি গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, চীন সরকার ধীরে ধীরে উইঘুরদের ধর্মীয়সহ অন্যান্য স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। জিনজিয়ানের শিবিরে উইঘুর নর-নারীকে সবসময় কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।

শিবিরে তাদের ওপর নানা নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়। সেখানে তাদের প্রজনন ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।  জোর করে তাদের বিশেষ মতবাদ শেখানো হচ্ছে।

মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, উইঘুরদের সঙ্গে চীনা কর্তৃপক্ষের আচরণ গণহত্যার শামিল। চীন দাবি করছে, উইঘুরদের গণহারে আটক ও জোর করে তাদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করার অভিযোগ ভিত্তিহীন, মিথ্যা।

জিনজিয়ানের শিবিরে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা জানতে পারা অনেকটা বিরল ঘটনা। তবে ওই শিবিরের সাবেক কিছু বন্দি ও রক্ষীর অভিজ্ঞতা জানতে পেরেছে বিবিসি।

তারা ওই শিবিরগুলোতে ‘পদ্ধতিগত’ গণধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিবরণ দিয়েছেন।তাদের একজন জিয়াউদুন।

ভুক্তভোগী জিয়াউদুন বলেন, প্রতি রাতেই শিবিরের সেল থেকে নারীদের নিয়ে যাওয়া হয়।  পরে বিশেষ কক্ষে নিয়ে এক বা একাধিক মাস্ক পরা চীনা ব্যক্তি এই নারীদের ধর্ষণ করেন।

জিয়াউদুন বলেন, তিনি নিজে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।  প্রতিবারই তাকে দুই বা তিন ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন।

জিয়াউদুন আগেও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।  তবে তা কাজাখস্তান থেকে।  সেখানে তিনি চীনে ফেরতের ঝুঁকিতে ছিলেন।

জিয়াউদুন বলেন, শিবির থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি নিজেকে আসলে ‘মৃত’ বলে মনে করছেন। ধর্ষণের শিকার হয়ে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছেন।

জিয়াউদুন বলেন, চীনা কর্তৃপক্ষ বলে, শিবির থেকে লোকজনকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।  কিন্তু তার মতে, যারাই শিবির থেকে ছাড়া পান, তারা আসলে শেষ হয়ে যান।  চীনা কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যই হলো—উইঘুরদের শেষ করে দেওয়া।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর