নতুন বছরে সাংগঠনিক স্থবিরতা কাটাতে চায় আ’লীগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনার কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক স্থবিরতা নতুন বছরে কাটিয়ে উঠতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই পুরোদমে শুরু হবে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

এছাড়া রয়েছে সারাদেশে দলের সদস্য পদ নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ। তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সম্মেলনের পাশাপাশি নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজও শুরু করা হবে। একই সাথে দলের সদস্য পদের নবায়ন কাজও চলবে। এ বছরেই দলের স্থগিত হয়ে থাকা কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে চান আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। করোনা সংকট কাটিয়ে উঠে এ বছরটিকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর হিসেবে দেখছেন তারা।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণি পর্যায়ের নেতারা জানান, নতুন বছরে দলকে শক্তিশালী করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে। এ বছর রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করার জন্য আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে দলের সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২০২১ সাল আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নেতারা জানান, সদ্য বিদায়ী ২০২০ সালে স্বাভাবিক কার্যক্রম কয়েক মাস স্থগিত থাকলেও দল নিষ্ক্রিয় থাকেনি। করোনায় বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে ত্রাণ, চিকিৎসা উপকরণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে আওয়ামী লীগ। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায়ও প্রস্তুত থাকতে ইতোমধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম তরঙ্গের মতো দিতীয় তরঙ্গ মোকাবিলায়ও আওয়ামী লীগ লীগ নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে। সেভাবেই দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের পর করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে ইতোমধ্যে কয়েকটি উপজেলা ও জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়েও সম্মেলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও আওয়ামী লীগের নেতারা জানান।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে দলীয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। করোনার কারণে ইতোমধ্যে মুজিববর্ষের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই সময় দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুজিববর্ষ উদযাপনের কর্মসূচিও চালিয়ে যাওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, এই বছর হবে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। সে অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে সর্বশক্তি নিয়ে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজে আমরা আত্মনিয়োগ করব। যদিও করোনার কারণে আমাদের দেশে সব কিছু স্থবির হয়ে পড়েনি। সরকার অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও আমরা বিভিন্নভাবে সচল রাখার চেষ্টা করছি। সাংগঠনিক কার্যক্রমে গত বছর যে ঘাটতি ছিল তা কাটিয়ে উঠে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করব। তৃণমূল পর্যায় থেকে উপজেলা, জেলা সম্মেলনগুলো সম্পন্ন এবং সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের কাজ শেষ করা হবে। পাশাপাশি করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি মোকাবিলায় পূর্বের মতো মানুষের পাশে থাকার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দলের সাংগঠনিক কাজ থেমে নেই। করোনার মধ্যে মানুষের পাশে থাকাও সাংগঠনিক কাজ, সাংগঠনিকভাবেই নেতারাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই বছর থেকেই দলকে তৃণমূল পর্যায় হতে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি উপজেলা ও জেলা সম্মেলন হয়েছে, ইউনিয়ন পর্যায়েও সম্মেলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২২ সালের মধ্যে সংগঠনের তুণমূল পর্যায়ে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর