শীতের সকালে খেজুরের রস নিয়ে ছুটছেন কাজিমুদ্দিন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস। এমন পরিস্থিতিতে দিনাজপুরের হিলিতে খেজুরের রস বিক্রেতা কাজিমুদ্দিনের খুবই কদর। টাটকা খেজুরের রস সরবরাহে এই ছোট শহরটিতে কাজিমুদ্দিন পরিচিত মুখ।

শীত এলেই হিলিতে দেখা মেলে নাটোরের কাজিমুদ্দিনের। এখন তার বয়স ৬৫।   জানালেন, ৩০ বছর ধরেই শীত মৌসুমে হিলি চলে আসেন। বলা যায়, পরিযায়ীদের মতো হিলি তার শীতকালীন ঠিকানা।

হিলি সীমান্ত এলাকায় একশ’রও বেশি খেজুর গাছ তিনি নিয়েছেন এবার। প্রতিটি গাছ গৃহস্থর কাছ থেকে ছয় মাসের জন্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বর্গা নিয়েছেন কাজিমুদ্দিন।  প্রতিটি গাছ থেকে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ কেজি রস নামাচ্ছেন। সকালে কাঁধে বয়ে হিলি শহরের আনাচে-কানাচে রস নিয়ে ছুটে যায় কাজিমুদ্দিনের দলবল। নিজেও রসের হাড়ি নিয়ে ছোটেন। দেখা যায় রস গাছ থেকে পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছতলা থেকেও নিয়ে যাচ্ছেন অনেক ক্রেতা। প্রতি কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করছেন। আর গ্লাস প্রতি নিচ্ছেন ৫ টাকা করে। বিকেলের আগেই গাছের যে অংশ দিয়ে রস পড়ে, সে অংশ চেঁছে হাড়ি ঝুলিয়ে দেন।

ভোর রাতে গাছ থেকে পেড়ে সকাল সকাল বিক্রি করেন। কারণ, যত বেলা হতে থাকে রস ততই নষ্ট হতে থাকে। গরম বা সূর্যের আলো বেশি পড়লে, রসগুলো ঝাঁঝালো হয়ে উঠে।  তাই বেশি বেলা হওয়ার আগেই রসগুলো বিক্রি করে ফেলেন গাছাড়ি কাজিমুদ্দিন।

কাজিমুদ্দিনের রসের হাড়ির কাছে বসে খেজুরের রস খেতে খেতে হিলি বাজারের হাসান আলী বলেন, খেজুরের রস আমার খুব প্রিয়। আজ ৫ টাকা করে তিন গ্লাস রস খেলাম।

হিলির রাজধানী মোড়ের দোকানদার মিজান বলেন, আমি সেই ছোট বেলা থেকে রস বিক্রি করতে দেখে আসছি কাজিমুদ্দিনকে। তার রসে কোনো ভেজাল মিশানো থাকে না।

কুদ্দুছ আলী খাঁন বললেন, বাড়ির আবদার খেজুরের রসের পিঠা তৈরি করবে।  তাই বেশি করেই রস নিলাম।

কাজিমুদ্দিন জানালেন, আবহাওয়া ভাল থাকায় এ বছর গাছ থেকে রসের পরিমাণটা বেশি নামছে।  শীতের শুরুতে হিলিতে এসেছি। এটা আমার বাপ-দাদার আমলের কাজ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর