প্রবাসে নারী কর্মী নিয়োগে আবাসিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রবাসে নারী কর্মীর সুরক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে বিদেশগামী নারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণভাবে আবাসিক করা হচ্ছে। প্রত্যেক নারী কর্মীর জন্য বাধ্যতামূলক এ আবাসিক প্রশিক্ষণ হবে ৩০ দিন মেয়াদি।

বিদেশগামী নারী কর্মীদের অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত ক রার লক্ষ্যে ১২টি নির্দেশনা দিয়ে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিক রপ্তানিতে অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী এক মাসের মধ্যে হাউজ কিপিং কোর্সের কারিকুলাম হালনাগাদ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে এটি চালু করবে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিসিসি) মাধ্যমে। প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ নারী কর্মীদের মূল্যায়ন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিএমইটি সম্পন্ন করবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. যাহিদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি বয়স কম বা বেশি দেখিয়ে এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ ও মেডিক‌্যাল পরীক্ষা ছাড়া নারী কর্মীদের সৌদি আরবে পাঠিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভবিষ্যতে বিদেশে পাঠানোর জন্য আবাসিক প্রশিক্ষণ দিতে নারী কর্মীদের প্রাথমিক বাছাই করবে রিক্রুটিং এজেন্সি। পরবর্তী সময়ে সরকার গঠিত কমিটি চূড়ান্তভাবে বাছাই করে নারী কর্মীদের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিএমইটির নারী কর্মী সুরক্ষা সেলে পাঠাবে। নারী কর্মীদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে পাঠানোর আগে প্রি-মেডিক‌্যাল করাতে হবে। বহির্গমন ছাড়পত্র গ্রহণের সময় চূড়ান্ত মেডিক‌্যাল রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদেশ যাওয়ার আগে প্রত্যেক নারী কর্মীকে একটি করে স্মার্টফোন দেবে রিক্রুটিং এজেন্সি। চুক্তিপত্র বাংলায় অনুবাদ করে সেখানে উল্লেখিত বিষয় নারী কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে জানাবে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি। কোনো কর্মী বিদেশ গেলে তার ফ্লাইট নম্বর, সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির তথ্য বিএমইটির নারী কর্মী সুরক্ষা সেল, বিমানবন্দরে কল্যাণ ডেস্ক ও বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট শ্রমকল্যাণ উইংয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাবে রিক্রুটিং এজেন্সি।

বিমানবন্দরের কল্যাণ ডেস্ক বিদেশগামী নারী কর্মীর সব তথ্য যাচাই করে অসংগতি পেলে অথবা কর্মীর বয়স কম-বেশি অথবা অসুস্থতা পেলে অফলোড করতে পারবে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট দেশে পৌঁছানোর পর নির্দিষ্ট এজেন্সি নারী কর্মীকে রিসিভ করে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবে। বিদেশে অবস্থানের সময় নারী কর্মী সমস্যায় পড়ে দূতাবাসের সেফ হাউজে আশ্রয় নিলে শ্রমকল্যাণ উইং প্রত্যেকের জন্য একটি বিবরণী মন্ত্রণালয় ও বিএমইটির নারী কর্মী সুরক্ষা সেলে পাঠাবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন এজেন্সির সমন্বয়ে গঠিত ভিজিল্যান্স টাস্কফোর্স প্রতি মাসে কমপক্ষে দুবার নারী কর্মীদের বিদেশ গমনের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএমইটি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৬৯৫ নারী শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর