হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিরাপদ খাদ্য সহায়ক বাজেটের প্রস্তাবনা দিয়েছে বিসেফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের সহ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক সাংবাদিককে বলেন, রমজান মাসেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত অভিযানে এমন তথ্য বের হয়ে এসেছে যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। দুধে ক্ষতিকর মেটাল, এন্টিবায়োটিক, ভোজ্য তেল নিয়ে অপকারবার, পচা ও বাসি মাছ-মাংস, ধূলাবালি মেশানো খাবার- এসব কারণে মানুষের মধ্যে খাদ্য আতংক বেড়েছে।
তারপর আবার হাইকোর্টে যখন নিষিদ্ধ করা হলো নামী দামি কোম্পানির অনেক ব্র্যান্ড পণ্য। এখন মানুষ উদ্বিগ্ন তারা কি খাবে বা খাবে না। পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য সহায়ক বাজেট প্রণয়নে বিসেফ ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবনাসমূহ হলো-
১. খাদ্য চক্রে জড়িত সকল পক্ষের পধ্যে অর্থৎ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, খাদ্য, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, সড়ক ও পরিবহনসহ সকল পক্ষের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাটা কেবল রেগুলিটরি প্রক্রিয়া নয়, এর মাঝে সাপোর্টিভ সিস্টেমও থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো এই সিস্টেম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
২. নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর বাস্তবায়ন সহযোগিতার লক্ষ্যে সর্বস্তরে ব্যাপক জনসেচতনতা সৃষ্টি, উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ক্ষমতায়ন এর উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘নিরাপদ খাদ্য ফাউন্ডেশন’ গঠন করা প্রয়োজন। এই ফাউন্ডেশন পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ ও অর্থায়ন সম্পর্কিত বিদ্যমান তথ্যাদি সর্বস্তরে সহজবোধ্য ভাষায় প্রাচরের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩. বাংলাদেশ ব্যাংক এর কৃষিঋণ নীতিমালা সংস্কার করে নিরাপদ খাদ্য ‘ভ্যালু চেইন’ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প সুদে এবং সহজে ঋণ পাবার নিশ্চয়তা তথা স্পেশাল ফিনান্সিয়াল প্যাকেজ চালু করা।
৪. পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ কার্যক্রমে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। এই খাতে অনুদান প্রদানকে ‘কর রেয়াত’ সুবিধার আওতায় আনা যেতে পারে।
৫. পিপিপির আওতায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণন সহায়ক প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।
৬. সরকারি উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্যের বিশেষায়িত বাজার-যেমন হাসপাতাল, সশস্ত্রবাহিনী, কারাগার, সরকারি দপ্তর ইত্যাদি সৃষ্টি করতে হবে। এই সব প্রতিষ্ঠান যদি নিরাপদ কৃষি পণ্য ব্যবহার শুরু করে তাহলে উদ্যোক্তারা ক্রমেই উৎসাহিত হয়ে উঠবে।
৭. নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন কারীদের সরাসরি প্রণোদনা প্রদান করা প্রয়োজন। রাসয়নিক সারের জন্য যে প্রণোদনা আছে সেটি জৈব সার বা খামারজাত সারের ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ করা যায়। এর ফলে মাটির স্বাস্থ্য যেমন রক্ষা পারে তেমনি রাসায়নিক উপর থেকে নির্ভরতাও ক্রমশ কমে যাবে।
৮. মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়ানিক উপাদন, কীটনাশক আমদানি নিরুৎসাহিত করা এবং বায়োপেস্টিসাইড ও অন্যান্য সহায়ক উপকরণ উৎপাদন খরচ হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।
৯. কৃষি পণ্য পরিবহনে প্রণোদনা দান এবং গণ পরিবহনে কৃষি পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। সড়ক পরিবহনে যে নৈরাজ্য আছে তার শিকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে সবাই। রেলওয়ে, ওয়াটার ওয়ে, বিআরটিসির মতো সংস্থাগুলো কৃষি পণ্য নিরাপদ পরিবহনে ভূমিকা রাখতে পারে। এর ফলে পরিবহন ব্যয় কমে আসবে।
১০. কৃষি ভিক্তিক শিল্প স্থাপনে মনোযোগ বাড়াতে হবে। ফুড প্রসেসিং ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে দায়িত্বশীল গড়ে তোলার জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে।