হাওরের কৃষক আকাশে মেঘ দেখলেই আতংকিত হয়ে পড়েন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আকাশে কালো মেঘ দেখলেই আতংকিত হয়ে পড়েন হাওরের কৃষক। কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে হাওরের কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। এ নিয়ে এখন তাদের ভাবনার শেষ নেই।

হাজার হাজার হেক্টরের বিস্তীর্ণ হাওরে এখন ধানগাছের আগায় উঁকি মারছে অপুষ্ট ধানের ছড়া। আর মাত্র ১৫-২০ দিনের মধ্যে পেকে সোনালি রঙ ধারণ করবে এ ধান। কয়েক দিন আগে কিশোরগঞ্জের উপর বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে হাওবাসী আতংকিত হয়ে পড়েছেন। কিছু জমিতে আবার দেখা দিয়েছে চিটাও। বছরে একটি মাত্র বোরো ফসলে ধান সংগ্রহ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

হাওরবেষ্টিত ইটনা উপজেলার পূর্বগ্রাম, লাইমপাশা, বাদলা, থানেশ্বর, মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া, চারিগ্রাম, ঢাকি, মহিষাকান্দি, অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল, দেওঘর, বাংগালপাড়া ও আদমপুর, নিকলী উপজেলার ছেত্রা, ছাতিরচর, সিংপুর, দামপাড়া ও গুরুই এলাকার কৃষকরা সাংবাদিককে বলেন, এবার হাওরের এক ইি জমিও অনাবাদি নেই। ধানের ফলনও হয়েছে বাম্পার। তারা বলেন, প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে জমিতে গিয়ে দেখভাল করছি। এবার সময়মতো সেচ, সার ও কীটনাশক দিতে পেরেছি। তাই এবার ভালো ফলনের আশা করছি। এভাবে ঝড়-বৃষ্টি হতে থাকলে বাঁধ ভেঙে না আবার সর্বনাশ হয়ে যায়। এরই মধ্যে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখীর তা-বে কিছু ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু জমিতে আবার দেখা দিয়েছে চিটাও।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাওরবেষ্টিত কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজারে এবার ৯ লাখ ২১ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে বোরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন চাল।

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সফিকুল ইসলাম সাংবাদিককে বলেন, বোরো আবাদ এবার কৃষক-কৃষাণিরা দলবেঁধে মাঠে নেমেছেন। চাষাবাদের উপযোগী কোনো জায়গা খালি নেই। গত কয়েক দিনের ঝড় ও শিলাবৃষ্টি বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তাদের আশা পূরণ হবে। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সব ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে-কখন কী করতে হবে। দুর্যোগের আশঙ্কা থাকলে প্রয়োজনে আধা পাকা এবং খাওয়ার উপযোগী ধান কেটে ফেলার কৌশলও বলে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এবার হাওরের কৃষক সফল হবেন। তিনি আরও জানান, কিশোরগঞ্জে এবার লক্ষমাত্রা ছিলো ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩ শত ১৭ হেক্টর ভূমিতে ধান রোপনের। বোরো আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫ শত হেক্টর ভূমিতে। আমাদের লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমি আবাদ হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর