নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার ৫ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানাসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পৌনে ১১টার দিকে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ২৪০ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা শুরু করেন।

মামলার অপর চার আসামি হলেন-মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আব্দুস সালাম বেগ ও নুরউদ্দিন। বর্তমানে সবাই পলাতক রয়েছেন। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী।

এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি এ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি। আর আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

এই মামলার মোট আসামি ছিলেন সাতজন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যান আহাম্মদ আলী (৭৮)। আর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় মারা যান আরেক আসামি আব্দুর রহমান। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর ১ টায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আ. কাদির বাদী হয়ে ২০১৩ সালে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেও পরে তদন্তে আরো তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে মোট আসামি হন সাতজন। কিন্তু পরে এ মামলার দুই আসামি মারা যান।

বাদী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির মামলায় অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চান। ভাইদের কোনো খোঁজ না দেওয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর