পোষা পাখির প্রদর্শনীতে বনের পাখি বাঁচানোর আর্তি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাহারি রঙের পাখির কিচিরমিচির আর দর্শকদের আনন্দ উচ্ছাসে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল চতুর্থ পোষা পাখি মেলা। ‘বনের পাখি বনে রবে, খাঁচার পাখি বন্ধু হবে’ শীর্ষক স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) পোষা পাখি, কবুতর ও পোষা প্রাণীর নিয়ে দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। আজ শনিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মেলা উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আবদুল হালিম, রেজিস্ট্রার মির্জা ফারুক ইমাম, বহিরাঙ্গণ কার্যক্রম পরিচালক অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুদ্দীন, পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) অধ্যাপক ড. কবিরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ড. ভজন চন্দ্র দাস, অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক মিয়াজী ও ডা. মো. সাদ্দাম হোসেন। মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনা, মোনাজাত ও তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বার্ড ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন, এনিম্যাল কেয়ার অব চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম হাইফ্লায়ার জোন, অ্যাসোসিয়েশন অব এভিয়ান ভেটেরিনারিয়ান বাংলাদেশ ও বার্ডস অ্যান্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিকস্ যৌথভাবে এ মেলা আয়োজন করে। মেলায় প্রায় ৮০ প্রজাতির পাঁচ শতাধিক পাখি, টার্কি, খরগোশ, ১০ প্রজাতির ৪৫টি উন্নত জাতের কুকুর, ৫ প্রজাতির ১৬টি বিড়াল, ১০টি বিরল প্রজাতির খরগোশ এবং ১০০ প্রজাতির অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছসহ বিভিন্ন জাতের পোষা প্রাণী প্রদর্শন করা হয়।

প্রদর্শীত পাখিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-বাজেরিগার, কুনোর, লরি, ককাটাইল, কাকাতুয়া, ম্যাকাও, ব্লু-হেডেড ম্যাকাও, কেকালিনা কাকাতুয়া, গ্রে-প্যারট, র‌্যাম্প, ক্রিমসন, ভেলিট কুনোর, রুবিনো, রোজিলা, মিলি রোজেলা, ক্লু-ক্রাউন কুনোর, রেডলরি ও ক্যাটরিন লরি।

এছাড়া রঙ-বেরঙের কবুতরের মধ্যে হাউজ পিজিওন, পোমারিয়ান পোটার, ফিন্ডব্যাক, সর্ট ফেইস, লং ফেইস, হোয়াইট টপ বোখারা, মন্টেনা, ফ্রেঞ্চ মন্ডেইন, মংক কোমরনা, মুক্ষী, সাটিন, পেন্সিল বল, রেন্টি, আর্চ অ্যাঞ্জেল, গ্রিজেল, ব্লু চেক, কাচুরী, নোল্ডেন, ম্যাকপাই পোর্টার দৃষ্টি কেড়েছে সবার।

মেলায় স্বেচ্ছাসেবকরা দর্শনার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এসব প্রাণীর সাথে। অনেকে কিনে নিয়ে যান পছন্দের পাখি, জেনে নিয়েছেন এগুলোর পালন পদ্ধতি সম্পর্কে।

সিভাসু উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, পোষা পাখি ও প্রাণী পালনকে যারা পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী, তাদের জন্য এ মেলা সহায়ক হবে। বিশেষ করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা মেলায় কোনো ধরনের বন্যপাখি আনার অনুমতি দিইনি। শুধুমাত্র খাঁচায় বসবাসের উপযোগী পাখিগুলো আনার অনুমতি দিয়েছি। খাঁচায় যেসব পাখির বসবাস, সেগুলো সাধারণত মানুষের সংস্পর্শে থাকে। সেগুলোকে যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, বনে উড়ে যেতে পারবে না। এছাড়া হিংস্র পাখির আক্রমণেরও সম্ভাবনা থাকে। ছেড়ে দিলেও সেগুলো আবারও খাঁচায় ফিরে আসবে। আর বন্যপ্রাণীকে ধরে যদি খাঁচায় পুরি, তাহলে সেগুলো বাঁচবে না। সেজন্য বলা হচ্ছে- বনের পাখি বনে রবে, খাঁচার পাখি বন্ধু হবে।

সূত্র- বাংলাদেশ জার্নাল

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর