ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলা ইউনিয়নে ভারত থেকে বেয়ে আসা ছিলাই নদীর উপর বাঁশের সেতু নির্মাণ করে বিভিন্ন স্থানের মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে আসছে। প্রায় ২ শত ফুট দীর্ঘ বাঁশের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষজন। দীর্ঘদিন ধরে ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকে বাঁশের সেতু তৈরি করে মানুষজন চলাচল করে আসছেন। ওই সময় বাঁশের সেতু তৈরি করে শুধু মানুষজন চলাচল করতেন। কিন্তু যানবাহন চলাচল করতো না। এখন ছিলাই নদী অনেকটা ছোট হয়ে এসেছে। শক্ত-মজবুত বাঁশের সেতু তৈরি হওয়ায় এখন যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করছে।
ছিলাই নদীর পশ্চিমপাড়ে বিজিবি ক্যাম্পরঘাট, আলমখালী, ইদুকোনা, বোগলা, বাগানবাড়ি, পেশকারগাঁও, গাছগড়া, ধর্মপুর, কাঁঠালবাড়ি, ভাংগাপাড়া ইত্যাদি গ্রামের মানুষসহ যানবাহন চলাচল করে। ছিলাই নদীর পূর্বপাড়ে আননপাড়া, ইসলামপুর, মৌলারপাড়, পেকপাড়া, চৌধুরীপাড়া, পুরাতন বাঁশতলা, হকনগর, কুমিল্লাপাড়া, কলাউড়া, পূর্ব বাংলাবাজার, কলোনীবাজার ইত্যাদি এলাকার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে প্রতিদিন। এছাড়া বোগলা হাইস্কুল ও কলেজসহ কয়েকটি প্রাইমারী স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আসা যাওয়া করেন এই বাঁশের সেতু দিয়ে। ছিলাই নদীর বাঁশের সেতু দিয়ে রোগী, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন চলাচল করে থাকেন।

এই প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা রমজান আলী জানান, আজ প্রায় ৪০ বছর ধরে ছিলাই নদীর উপর বাঁশের সেতু দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে আসছে। কিন্তু এই ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এভাবে মানুষজন চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণ করার দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের।

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, আমাদের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য নিজেরাই বাঁশের মাচান দিয়ে সেতু তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছি। আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত করতে কেউ এগিয়ে আসছেন না। এই ছিলাই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ খুবই জরুরি।
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম ও মোফাজ্জল হোসেন জানান, ছিলাই নদীতে বাঁশের সেতু দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে বছরের আট মাস। পরে আবার চার মাস নৌকায় চলাচল করতে হয়। বর্ষায় যানবাহন করতে পারে না। ছিলাই নদীতে সেতু নির্মাণ হলে নানা ভোগান্তি থেকে মানুষজন রক্ষা পেতেন।

বোগলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর থেকে বাঁশের মাচানের সেতু তৈরি করে এলাকার মানুষ আসা-যাওয়া করছেন। এখন এলাকায় মানুষ বেড়েছে। সেই সাথে সেতু ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে চলেছে। এখন এই বাঁশের সেতু দিয়ে বাধ্য হয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। সময় ও খরচ বাঁচাতে গিয়ে বাঁশের সেতু ব্যবহার করায় ঘটে চলেছে নানা দুর্ঘটনা। কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে লোকজন এসে ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য সার্ভে করে গেছেন। এরপর আর কিছুই জানা যায়নি। মানুষ ও যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে এই ছিলাই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ জরুরি প্রয়োজন।’

দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হরজিত সরকার বলেন, ‘লক্ষীপুর ইউনিয়নের ছিলাই নদীর উপর সেতু নির্মাণ হবে এমন পরিকল্পনা থেকে কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে লোকজন এসে সার্ভে করে গেছেন। এখন কোন পর্যায়ে আছে তা জানা যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর