নারী আসনে যাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে সদস্য হতে এবার সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ইচ্ছুকের সংখ্যা। দলটির অন্যান্য নারী সদস্যের সঙ্গে মনোনয়ন পেতে এবার তারকাদেরও ঢল নেমেছে। তিন দিনে দলটির মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ১৩৮৫টি।

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটা এক নতুন রেকর্ড। ২০০১ সালে যারা হাওয়া ভবনের লাইনে দাঁড়িয়ে তারেক রহমানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তারাও এবার আওয়ামী লীগের টিকেটে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। কিন্তু দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘তারকা হলেই মনোনয়ন পাবে এমন কোন কথা নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের যোগ্য, ত্যাগী এবং পরীক্ষীতদেরই মহিলা এমপি হিসেবে মনোনীত করবেন।’

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সংরক্ষিত আসনের জন্য সেলিব্রেটি নয় বরং পাঁচ যোগ্যতার ভিত্তিতে নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন।

এই ৫ যোগ্যতা হল-

১. যেসব জেলায় গতবার এবং তার আগেরবার কোন মহিলা এমপি মনোনীত হননি। সেই জেলাগুলো থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের অগ্রাধিকার দয়া হবে। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এ রকম জেলার সংখ্যা ২১টি।

২. দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ বা অঙ্গসংগঠন করে মূল দলে বা মহিলা অঙ্গসংগঠনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

৩. ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ক্ষতিগ্রস্থ এবং নির্যাতিত এবং ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনে সক্রিয়দের ব্যাপারে প্রাধান্য দেয়া হবে।

৪. দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন, কিন্তু গত দশবছরে কিছু পাননি এমন নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

৫. আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয় জড়িত, পাশাপাশি স্বপেশায় আলোচিত, প্রশংসিত এমন চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, শিল্পীদের বিবেচনা করা হবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, একদিকে যেমন নারী আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতার পাঁচ মাপকাঠি চূড়ান্ত করা হয়েছে ঠিক তেমনি অন্যদিকে আবার অযোগ্যতারও পাঁচটি দিক তুলে ধরা হয়েছে।

এই ৫ অযোগ্যতাগুলো হলো-

১. যারা কখনো আওয়ামী লীগ সরাসরি করেননি, হঠাৎ করেই মনোনয়ন চেয়েছেন।

২. যারা বিগত সময়ে এমপি ছিলেন কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন অথবা তাদের কর্মকাণ্ডে দল বিব্রত হয়েছে।

৩. যাদের নিয়ে বিতর্ক আছে বা বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ আছে।

৪. বিএনপি বা জামায়াত করতেন এখন আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।

৫. ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থী ছিলেন অথবা সংস্কারপন্থীদের ঘনিষ্ট ছিলেন।

তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, চূড়ান্তভাবে কারা মনোনয়ন পাবেন তা ঠিক করবেন দলের সভাপতি।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। আসনগুলোতে সংসদ (এমপি) নির্বাচনের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৬টি আসনের বিপরীতে যে কোনো দল বা জোট একটি সংরক্ষিত আসন পাবে। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৭টি আসন। সে অনুযায়ী এ প্রাপ্ত আসনের হিসাবে সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পাবে ৪৩টি আসন। এরপর বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ৪টি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১টি এবং স্বতন্ত্র ও অন্য দল মিলে ২টি আসন পাবে।

এই সংরক্ষিত আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের মঙ্গলবার ফরম বিক্রি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার ফরম বিক্রির শেষ দিন নির্ধারণ করা হলেও আরও একদিন বাড়িয়ে তা শুক্রবার পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে ফরম জমা দিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর