শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া দেশের জন্য বাংলাদেশ অনুকরণীয়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আগামী দিনের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সময়োপযোগী আধুনিক ও উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করাই হবে সরকারের কাজ।

তিনি বলেন, শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ অনুকরণীয়। কারণ বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, আজ বিশ্বের সকল জাতির কাছে আমরা রোল মডেল। আমাদের এ অগ্রগতি কেউ থামাতে পারবে না। আমরা একসময় বিশ্ব নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হব।

মঙ্গলবার বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়ে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’-এর উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আট শিক্ষার্থীর হাতে নতুন এক সেট করে বই তুলে দেন।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আয়োজিত বিনামূল্যের বই বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। এর আগে ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই বিতরণ শুরু করেন।

২০১০ সাল থেকে পহেলা জানুয়ারি খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশেষ দিন। যে দিনটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে থাকে আনন্দের উদ্ভাস। কারণ এদিন হয় বই উৎসব। বই উৎসবের দিন নতুন বইয়ের ঘ্রাণে শিক্ষার্থীরা যেন আরো চঞ্চল হয়ে ওঠে।

সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের জন্য আনন্দের দিন, একটি ইতিহাস সৃষ্টির দিন। বিনামূল্যে এতো বই বিতরণের উদাহরণ আর কোথাও নেই। আমরাই এতে সফল হয়েছি।

তিনি বলেন, প্রতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেই। ২০১০ সালের পর একবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। স্বাধীন দেশ বলে এটা সম্ভব হয়েছে। বাঙালি জাতির হাজার বছরের গৌরব স্বাধীন বাংলাদেশ। আর এর মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মের জন্য সবকিছু উজাড় করে দেব। আমাদের এ প্রজন্ম কোনো অংশেই বিশ্বের কোনো অংশ থেকে পিছিয়ে নেই। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর একটা যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে পেরেছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা দুনিয়ায় একমাত্র দেশ যে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেই। আমরা কাউকে পেছনে ফেলে যাব না। সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব। সব ছেলে-মেয়েকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। আজকে ছেলে-মেয়ে সমতা আনতে পেরেছি। মাধ্যমিকে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বমানের শিক্ষা দিতে চাই। একই সঙ্গে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন খাঁটি মানুষ তৈরি করতে চাই। আমরা সমস্ত শ্রম মেধা দিয়ে আমাদের সন্তানদের গড়ে তুলব।

অনুষ্ঠানে রাজধানীর ২৬টি স্কুলের ৭ হাজার শিক্ষার্থী ও ৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এসব শিক্ষার্থীরা নানা রঙয়ের ক্যাপ পরে হাতে জরির ফিতা নিয়ে উড়িয়ে বেড়াচ্ছে। নতুন বই পাওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা তারা। শিক্ষকরাও তাদের এ আনন্দে শামিল হয়েছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে ‘বই উৎসব দিবস’ পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

এবার দেশব্যাপী প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, এসএসসি ভোকেশনাল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ চার কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২ পাঠ্যবই বিতরণ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর