শেষ মুহূর্তের প্রচারণা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করুন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি। আজ সকাল ৮টা থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত। এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মানুষ খুশি। সবাই আশা করছে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরই থাকবে নির্বাচনের পরিবেশ। সবাই নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। অবশ্য দেশব্যাপী বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষের ঘটনায় মানুষের মনে এক ধরনের শঙ্কাও কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পাশাপাশি সারা দেশে সেনাবাহিনীও টহল দিচ্ছে। এতে মানুষ অনেকটাই আশ্বস্ত। আশা করা যায়, পরিবেশ-পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণই থাকবে।

নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষ যেন আমাদের রীতি হয়ে গেছে, সেটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনই হোক আর জাতীয় নির্বাচনই হোক। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আশপাশের দেশগুলোর চিত্রও প্রায় একই রকম। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের চিত্র ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক। সে তুলনায় আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা এখন পর্যন্ত অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে। এর পরও সীতাকুণ্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রচারাভিযানে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাবনায় বিএনপির প্রার্থীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। বেশ কিছুু জায়গায় আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘাত-সংঘর্ষ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারে কালো টাকা ছড়ানোর বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।

হাওয়া ভবনের এক সাবেক কর্মকর্তার কাছ থেকে আট কোটি টাকা নগদ এবং ১০ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে এক মাসে ৭৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কালো টাকার ব্যাপারেও নজরদারি বাড়াতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে বাংলাদেশ এক নতুন ভাবমূর্তি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা সূচকে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সেখানে একটি বড় সমস্যা দেশের অসুস্থ রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি চর্চার অভাব। সারা দুনিয়া তাকিয়ে রয়েছে আমাদের এই নির্বাচনের দিকে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ না হলে তা আমাদের ভাবমূর্তিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অবশ্য সংখ্যায় কম হলেও কিছু ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে। সিলেটের ছয়টি নির্বাচনী এলাকায়ই উভয় পক্ষের প্রার্থীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

নির্বাচনের আগে ও পরে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে সংখ্যালঘুরা। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবারও ঘটেছে। জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। শেষ মুহূর্তে কালো টাকার ছড়াছড়ি বেড়ে যেতে পারে। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে আরো বেশি তৎপর হতে হবে। গোয়েন্দা নজরদারি অনেক বেশি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। জয় বা পরাজয়কে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে হবে। আমরা আশা করি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর