পানি শুকোলেই শালমালার অন্য চেহারা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রচণ্ড গরম। কমছে স্রোত। সাঙ্গ হচ্ছে জললীলা। দাবদাহে শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। কিন্তু সেই খরতাপ, অল্প পানি ভেদ করে মুণ্ডু উঁচু করছে শিবলিঙ্গ। একটি দুটি নয়, শুকনো নদীখাতজুড়ে ফুটে উঠছে হাজার হাজার শিবলিঙ্গ! গুজব ভাবছেন? না, তা মোটেও নয়। আশ্চর্য এই ঘটনার সাক্ষী ভারতের কর্ণাটকের শালমালা নদী। উত্তর কর্ণাটকের সিরসি এলাকা থেকে ১৭ কিলোমিটারের মধ্যেই শালমালা নদীখাতে এই হাজারো শিবলিঙ্গ দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।

আর তা শুনে তো ঈশ্বর-বিশ্বাসীদের হৃদয়ে ধুকপুক বেড়ে গেছে। চক্ষু চড়কগাছ। আলোড়িত মানুষ নমঃ নমঃ করছে। পাথরে খোদাইকৃত এসব শিবলিঙ্গ একবার দর্শন করতে এই এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন বহু পর্যটক। শিবরাত্রিতেও বহু পুণ্যার্থী সমাগম হচ্ছে এখানে। নদীখাতে শিবলিঙ্গগুলোর সামনে রয়েছে নন্দীমূর্তিও।

ঐতিহাসিকরা অবশ্য এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ১৬৭৮ থেকে ১৭১৮-র মধ্যে সিরসির রাজা সদাশিবরায় শালমালা নদীখাতে এই শিবলিঙ্গ ও নন্দীর মূর্তি তৈরি করান। মনে করা হয়, সদাশিবরায়ের রাজত্ব অবসানের কিছু পরপরই শালমালা নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পায়। পানির নিচে হারিয়ে যায় হাজার হাজার শিবলিঙ্গ। গত কয়েক বছরের শুষ্ক আবহাওয়ায় আবার সেগুলি ফুটে ওঠে।

শুধু কর্ণাটক নয়, নদীখাতে ঠিক একইরকম সহস্রলিঙ্গ রয়েছে ভারতের বাইরেও। কম্বোডিয়ায় বিশ্বের বৃহত্তম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির আঙ্কোরভাট থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে নদীখাতে রয়েছে পাথরে খোদাইকৃত হাজার হাজার শিবলিঙ্গ। এসব লিঙ্গ পুজো করা না হলেও সারা বছরই গোটা বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন। শিবলিঙ্গ ছাড়াও লক্ষ্মী, রাম ও হনুমানের পাথরে খোদাই করা মূর্তিও রয়েছে এখানে। ঠিক কত বছর আগে কে এই মূর্তিগুলি তৈরি করেছিলেন, তার খোঁজ এখনও পাননি ইতিহাসবিদরা।

কম্বোডিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় বহু মন্দির ও দেবদেবীর মূর্তি ধ্বংস করা হলেও, এই সহস্রলিঙ্গে কখনও ধ্বংসের হাত পড়েনি!

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর