হাওর বার্তা ডেস্কঃ নানাগুণে সমৃদ্ধ কমলা। কমলার কোয়াই হোক বা খোসা, সবই পুষ্টির ভাণ্ডার। বলে শেষ করা যাবে না, এত গুণ কমলালেবুর। ভিটামিন সি, এ, ফ্ল্যাভনয়েড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ডায়েটারি ফাইবার।
কী নেই কমলালেবুতে? কমলা বা কমলালেবুর রস অত্যন্ত পুষ্টিকর। বেশিরভাগ রোগে পথ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। একজন মানুষের প্রতিদিন যে পরিমাণ ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়, তার প্রায় পুরোটাই একটি কমলালেবুতে পাওয়া যায়। মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম মজবুত করে তুলতে অব্যর্থ দাওয়াই।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কমলা লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান থাকে, যা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ছোটবড় নানা ব্যাধি ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। ভিটামিন সি এর অভাবে মুখে যে ঘাঁ হয় সেটার ঔষুধ হিসেবে কমলা ভাল কাজ করে।
ক্যান্সারের ঝুকি কমায়ঃ কমলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আলফা ও বেটা ক্যারোটিন ফ্ল্যাভনয়েড যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কমলালেবুতে লিমোনয়েড নামে এক পদার্থ থাকে যা মুখ, ত্বক, ফুসফুস, স্তন, পাকস্থলীতে ক্যানসার প্রতিরোধে সরাসরি উপযোগী। তাই ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন ১ টি কমলা খাওয়া উচিত।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতেঃ চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ। কমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। তাছাড়া মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য জরুরি ফলিক অ্যাসিড যথেষ্ট পরিমাণে থাকে কমলালেবুতে।
ওজন কমায়ঃ কমলার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওজন কমায়। তাই যাঁরা ওজন কমাতে চান, নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কমলার রস রাখতে পারেন।
ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতেঃ কমলার রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ভালো রাখে এবং ত্বক তারুণ্যদীপ্ত করে সতেজ ও সজীব রাখতে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকও দ্রুত বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। কমলায় থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে বহু বছর। ফলে, বয়স বাড়লেও, আপনাকে দেখাবে চিরতরুণের ন্যায়। এটি ত্বকের ব্রণ সমস্যা দূর করে ও ত্বকের কালো দাগ সারায়।
হার্ট সুস্থ রাখেঃ কমলায় বিদ্যমান পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলো শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল কমাতেও কমলালেবুর জুড়ি মেলা ভার। কমলার চর্বিহীণ আঁশ, সোডিয়াম মুক্ত এবং কোলেস্টেরল মুক্ত উপাদানগুলো হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে।
এছাড়া কমলার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা যে কোনো ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে এবং ফ্লু ও ঠান্ডা প্রতিরোধে কাজ করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাঁড়ের গঠনে সাহায্য করে। কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক কমলালেবু। কমলা খেলে খুধা বাড়ে, খাওয়ার রুচি বাড়াতেও সাহায্য করে।
টিকাঃ কমলা খাওয়ার পর খোসা ফেলে দিবেন না। কারণ কমলার খোসাতেও গুণের শেষ নেই। কমলার খোসা নানাভাবে রূপচর্চায় অত্যন্ত উপযোগী। কমলার খোসা স্কিনে ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সহায়ক। দাঁতের হলদে ভাব দূর করতে পারে কমলার খোসা।