নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মেঘনা-পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নদীবেষ্টিত মুন্সীগঞ্জের মেঘনা ও পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকার কারনে জেলার মাছবাজারগুলোতে ইলিশ না মিললেও কৌশলে ক্রেতার হাতে ঠিকই পৌঁছে যাচ্ছে ইলিশ। নদী তীরবর্তী এসব এলাকায় নানা কৌশলে ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে।

জেলে পরিবারের দাবি, পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনীয়  চাহিদা মিটাতে নিরুপায় হয়েই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

সরজমিনে ঘুরে  জানা গেছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও  মুন্সীগঞ্জের মেঘনা ও পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের বকচর, চর আব্দুল্লা ও কালিরচর মেঘনা তীরবর্তী এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। এ এলাকার নারী-পুরুষরা বিভিন্ন কৌশলে বিক্রি করছে ইলিশ। ইলিশ বহনকারী বিভিন্ন ট্রলার এসব এলাকার তীরে নিয়ে আসে বিক্রির জন্য। আর ভোরে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা স্বল্পমূল্যে এখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কৌশলে ব্যবসায়ীরা মাছ পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকের কাছে।

নদী তীরবর্তী এসব এলাকায় প্রায় এক-দেড় কেজি ওজনেরসহ ছোট-বড় বিভিন্ন ইলিশের দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম পাওয়ায় ক্রেতাদের আগমনে প্রতিদিন যেন ওইসব এলাকায় ইলিশের বাজার বসে। সদর উপজেলা ছাড়াও লৌহজং উপজেলার হলদিয়া, কনকসার এলাকায়ও ইলিশ বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। তবে জেলে পরিবারের দাবি, পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটাতেই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

জেলা মৎস্য অফিসার নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস সাংবাদিককে জানান, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধের লক্ষ্যে নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ২৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান চালানো হয়েছে ১০৮টি। এ পর্যন্ত জেল হয়েছে ৫৩ জন জেলের, মামলা হয়েছে ৬৫টি, জরিমানা হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা, জাল ধরা পড়েছে ১লিাখ ৭৮ হাজার মিটার, মাছ ধরা পড়েছে ১ দশমিক ৪৯ মেট্রিক টন। এ মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা মৎস্য অফিসার আরো বলেন, আমরা চাই না নদীতে মাছ ধরা পড়ুক, জেলে আটক হোক এবং জরিমানা হোক। আমরা জেলেদের অবহিত করছি এবং বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করছি এ সময়ে মাছ ধরা থেকে  বিরত থাকার জন্য।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞায় সাধারণ মানুষের সাড়া রয়েছে। স্থানীয় জেলে সাইজদ্দিন বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটাতেই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে এ সময়ে প্রতি জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে চাল দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই তা বিতরণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর