জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আর এ ক্ষেত্রে দলের ঘোষণাপত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর শেষে আগামীকাল শুক্রবার দেশে ফিরে আসার পর ইশতেহার তৈরির এই কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা গতকাল বুধবার সাংবাদিককে জানিয়েছেন, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাককে ইশতেহার তৈরি সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে ড. আবদুর রাজ্জাককে এরই মধ্যে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে ইশতেহার কমিটির সদস্যরা এক দফা বৈঠক করেছেন বলে ড. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গত ১০ অক্টোবর তারা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। আগামীকাল শুক্রবার আবারও বৈঠক করবেন। এর বাইরে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ড. আবদুর রাজ্জাক।

প্রথম দফার বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিকুজ্জামান, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. অনুপম সেন, অর্থনীতিবিদ ড. সাত্তার মণ্ডল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ূয়া ও ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ।

ইশতেহার সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তবে এ বিষয়ক কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইশতেহার নিয়ে এক ধরনের গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। এর আগে ইশতেহার চূড়ান্ত করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। পরে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে নির্বাচনী ইশতেহার সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত রূপ পাবে।

ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্তরা জানিয়েছেন, এবারের ইশতেহারে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের মতামত থাকবে। এতে দলের অঙ্গীকার ও কর্মসূচি তুলে ধরা হবে। আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণসহ কার্যকর সংসদ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়ও ইশতেহারে থাকবে। এ ছাড়া সুশাসন ও প্রশাসনিক সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা ও দুর্নীতি, দারিদ্র্য বিমোচনসহ কর্মসংস্থান ও কৃষির আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও বাণিজ্য, শিক্ষাসহ সংস্কৃতি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, চিকিৎসা ব্যয় সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে আনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ ইত্যাদি বিষয়ে দলীয় অবস্থান আরও স্পষ্ট করা হবে।

এ ছাড়াও নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুর অধিকার, শ্রমিক ও শ্রমনীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা, স্থানীয় সরকার ও জনগণের ক্ষমতায়ন, তথ্য ও প্রযুক্তি, যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামো, বিদ্যুৎসহ জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদ, মূল্যস্ম্ফীতি রোধ, সরকারি প্রচারমাধ্যম ও সংবাদপত্র, অবাধ তথ্যপ্রবাহ, পরিবেশ ও পানিসম্পদ, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে দলের পরিকল্পনার কথা নতুন করে জানানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর