যে ফুল ১২ বছর পর পর ফুটে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের কেরালা রাজ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর প্রাণ বৈচিত্রে সমৃদ্ধ এক জনপদ। পাহাড়, নদী, ঝরনা, সাগর, বন-কোনো কিছুরই ঘাটতি নেই এখানে। তবে এসব কিছু নয়, কেরালা অনন্য হয়ে আছে বিরল প্রজাতির এক ফুলের জন্য। ফুলের নাম নীলাকুরিঞ্জি। বড় অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের ফুল এটি। স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসে প্রতি ১২ বছর পর। ফুল ফোটার কয়েক মাসের মধ্যে স্বপরিবারে মিলিয়ে যায়। ফুলের জন্ম দিয়ে মরে যায় গাছ। পরে আবার গাছ জন্মালেও তাতে ফুলের দেখা মিলে না। দেখার জন্য ফের ১২ বছরের অপেক্ষা।

পাহাড়, নদী, সাগর তো বিশ্বের অনেক দেশেই আছে; এমনকি ভারতের অনেক রাজ্যে কেরালার চেয়ে কম নেই। কিন্তু তাদের কারোরই নীলাকুরিঞ্জি নেই। বিরল এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই নীলাকুরিঞ্জি ফোটার বছরে কেরালায় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভিড় জমায়।

কেরালার বেশ কিছু জায়গায় নীলাকুরিঞ্জি ফুটলেও মান্নার পাহাড় এবঙ তার আশপাশের এলাকাতেই এই ফুলের দেখা মিলে বেশি। সবুজ চা বাগান, একাধিক চঞ্চল ঝর্ণা ইত্যাদির কারণে মান্নার পাহাড় এমনিতেই নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধার। এটি আরও অপরূপ হয়ে উঠে নীলাকুরিঞ্জি ফোটার বছরে। পুরো পাহাড় বেগুনি ফুলে ছেয়ে যায়। মান্নার পাহাড়ের বাতাসও যেন বেগুনি হয়ে উঠে তখন।

neelakurinji-kerala.jpg

সমতলে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি নীলাকুরিঞ্জি গাছের দেখা মিললেও আসল সৌন্দর্য দেখা যায় পাহাড়ে। ১ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ই এই ফুল ফোটার আদর্শ স্থান বলে প্রকৃতিবিদরা মনে করেন।

Neelakurunji-3.jpeg

নীলাকুরিঞ্জি ফুলের বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য নেই। এর গড়ন কলসের মত। রঙ নীলচে বেগুনি। তবে কলি থেকে ফোটার পর কয়েক দফায় এর রঙ বদল হয়। নীলাকুরিঞ্জি গাছের উচ্চতা ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। এর ঘ্রাণ বেশ তীব্র। ফুলের সুগন্ধ আর উজ্জ্বল রঙ কীটপতঙ্গ ও মৌমাছিকে কাছে টেনে আনে। ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি ঘুরে বেড়ায় পাহাড়ে নীলাকুরিঞ্জির মধুর লোভে।

neelakurinji-kerala-1.jpg

চলতি বছর জুলাই মাসের শেষ ভাগে মান্নার পাহাড় ছেয়ে যায় নীলাকুরিঞ্জি ফুলে। চলতি অক্টোবর মাস পর্যন্ত থাকবে এ ফুল। পরবর্তী ১২ বছরে আর এর দেখা মিলবে না। ফের নীলাকুরিঞ্জি ফুটবে ২০৩০ সালে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর