‘আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়’

এস হোসেন আকাশ: ‘আসসালামু আলাইকুম, “কিমুন আছোন আপনেরা, সবাই ভালা আছুইন নি। আজকে আপনাহারে দেইখা আমার পেটটা ভইরা গেছে গা’ এমন ভাষা দিয়েই বক্তব্য শুরু করলেন রাষ্ট্রপতির ছেলে রাসেল আহম্মেদ তুহিন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর মেঝো ছেলে ও প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের পরিচালক রাসেল আহমেদ তুহিন।

তিনি বলেছেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের স্থান ৪৪তম। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৩তম স্থান দখল করে নিবে। এ জন্যে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে জয়যুক্ত করাতে হবে। কেননা আওয়ামী লীগের দ্বারাই দেশের উন্নয়ন হয়। আর এই কথাটি সকল জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। সেই উন্নয়ন যেনো স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি দ্বারা বাধাগ্রস্থ না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। স্বাধীনতা বিপক্ষের শক্তিকে সুযোগ দেয়া যাবে না।

সোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার নতুন বাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠ প্রাঙ্গণে হোসেনপুর তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাসেল আহমেদ তুহিন এসব কথা বলেন।

রাসেল আহমেদ তুহিন আরো বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার। আওয়ামী লীগ প্রাচীন সংগঠন, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে স্থান করে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। আমি বঙ্গবন্ধুর নৌকার কথা বলতে এসেছি। আওয়ামী লীগের হাত ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা বলতে এসেছি।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে রাসেল আহমেদ তুহিন তার বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি, আজ সে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ। তা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতার জননী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

রাসেল আহমেদ তুহিন যোগ করেন, এই সরকার ৪০% ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করে আসছে, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। বয়স্কদের বয়স্ক ভাতা এমনকি বিধবা নারীদেরকেও ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। দেশের ৭০ ভাগ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে বাকি রাস্তার কাজও সম্পন্ন হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ আজ মাছ রপ্তানি ও ফসল রপ্তানিতে বিশ্বে ৪র্থ স্থানের অধিকারী। ৪০ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা কৃষি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে বুলেট ট্রেনের জন্য কাজ চলছে, কাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়া আসা করতে মাত্র ২ ঘন্টা সময় লাগবে।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নাই, যারা দশ লক্ষ শরণার্থীকে জায়গা দিয়ে তাদের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়ার সাহস দেখাতে পারে। এই সাহস একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা-ই করে দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের গুণে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কাজ চলছে। আশা করা যায়, আগামী বছরের শুরুর দিকেই তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে। আর যারা বস্তিতে থাকেন, তাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বস্তিবাসীদের জন্য ১১ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এক সময় সার নিয়ে মারামারি, খুনাখুনি হতো। কৃষক ভাইয়েরা শান্তিতে ছিলো না, তাদেরকে শোষণ করা হতো। আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে কৃষক ভাইদের মুক্তি এসেছে। এখন বাংলাদেশে সারের কোন ঘাটতি নেই।

তুহিন বলেন, আওয়ামী লীগ তার তৃণমূল কর্মীদের মূল্যায়ন করে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগের প্রাণ, মূলশক্তি। নৌকা মার্কা জনগণের আস্থার মার্কা। নৌকা মার্কায় যেমন জনগণের আস্থা রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপরও বাংলার জনগণের আস্থা রয়েছে।

মাদক নিয়ে তুহিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শক্ত হাতে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। বাংলাদেশে দশ বছর আগেও রাতে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করলে ছিনতাইয়ের শিকার হতে হতো। কিন্তু যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করা হলো তার পর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উন্নতি হয়েছে।

তাই উন্নয়নের স্বার্থে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে জয়যুক্ত করে আওয়ামী লীগকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার সুযোগ করে দেয়ার জন্য রাসেল আহমেদ তুহিন সবাইকে আহ্বান জানান।

এসময় হোসেনপুরে তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিশাল জনসভায় এডভোকেট কামরুল আহসান মিলটনের সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. আ.ন.ম নৌশাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার মোঃ আসাদ উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল কাইয়ূম, গুরুদয়াল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক জিএস আব্দুস ছাত্তার, জেলা সড়ক পরিবহনের আহ্বায়ক লেলিন রায়হান শুভ্র শাহীন, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল ইসলাম উজ্জল, জেলা পরিষদের সদস্য এড. আনোয়ার হোসেন রুবেল, হোসেনপুর ডিগ্রী কলেজের সাবেক জিএস মোঃ সোহেল মিয়া, হোসেনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ মকবুল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল গনী ঢালী লিমন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পল্বব সরকার, আলমগীর হোসেন টুটুল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তুষার আহাম্মেদ, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রী রাহিমা আক্তার, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি সালমা হক, শাহীন সুলতানা, হোসেনপুর উপজেলা প্রজন্ম লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদরি স্বপন প্রমুখ।

উক্ত জনসভায় হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর