বিমানের রঞ্জু-মাসুদার মাদককাণ্ড তদন্তে কমিটি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন ফ্লাইটের আগমুহূর্তে ডোপ টেস্টে কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতির শরীরে মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপরেও তাকে দায়িত্বে রাখার ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি গঠনের কথা স্বীকার করলেও এতে কাদের রাখা হয়েছে, তা জানাননি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ।

তিনি আরো বলেন, ওই ঘটনায় কেবিন ক্রু মাসুমা মুফতিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আর তার মাদক নেয়ার তথ্য গোপন করায় ফ্লাইট সার্ভিসের ডিজিএম (ভারপ্রাপ্ত) নুরুজ্জামান রঞ্জুকে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে।

এদিকে, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী শাহজাহান কামাল বলেছেন, মাদক গ্রহণকারী এবং তার তথ্য ধামাচাপার চেষ্টাকারী— দু’জনকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে হোটেল কন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

জানা গেছে, প্রতিটি ফ্লাইট ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইলট ও ক্রুরা মাদক নিয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হতে ডোপ টেস্ট করা হয়। ঘটনার সময় কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতি মাদক সেবন করেও তা গোপন করে ফ্লাইটে আসেন। পরে ডোপ টেস্টে তিনি ধরা পড়ে যান।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটের দিন ২১ সেপ্টেম্বর ধরা পড়ার পরদিন সিঙ্গাপুর রুটে দায়িত্ব পালন করেন কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতি। কিন্তু, বিমানের নিয়ম অনুযায়ী ডোপ টেস্টে প্রমাণ মিললে কোনো ব্যক্তিকে পরবর্তী ৯০ দিন ডিউটি না দেয়ার বিধান রয়েছে।

পরে মাসুদা মুফতির ডোপ টেস্টের তথ্য ডিজিএম নুরুজ্জামান রঞ্জু ফ্লাইট শিডিউল বিভাগকে জানাননি।

জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডন যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেখান থেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউজার্সির নিউইয়র্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে এসে পৌঁছান তিনি।

আগামী ১ অক্টোবর সকালে লন্ডন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

ডিজিএম নুরুজ্জামান রঞ্জুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

নুরুজ্জামান রঞ্জু বিমানের ‘চিফ পার্সার’ থাকাকালে এক যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পদ হারান। তবে ওই ঘটনার বহু আগে থেকেই কেবিন ক্রু বা বিমানবালাদের কাছে আতঙ্কের নাম এই রঞ্জু।

তার মনোরঞ্জন না করে চাকরি করতে পেরেছেন, এমন নজির খুব কম। ২০১৪ সালের ওই যৌন কেলেঙ্কারির পর কিছুদিনের জন্য শাস্তি হিসেবে চিফ পার্সার থেকে রঞ্জুকে ফ্লাইট পার্সার করা হয়। কিন্তু, ওইটুকুই।

এরপর নিজের প্রভাব কাজে লাগিয়ে রঞ্জু স্বপদে ফেরেন। পরে ব্যবস্থাপক পদোন্নতি পেয়েছেন। আর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে আরেক দফা পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম)।

‘বিমানের ‘যৌন নিপীড়ক’ রঞ্জুর ডাবল প্রমোশন!’ শীর্ষক শিরোনামেও তার যৌন হয়রানির বিষয় নিয়ে পরিবর্তন ডটকমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

এসব বিষয় নিয়ে ডিজিএম নুরুজ্জামান রঞ্জুর মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর