বিএনপির কাছে যেসব আসন চায় শরিকরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আন্দোলনের প্রস্তুতির পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিএনপি একটি খসড়া প্রার্থী তালিকা করে রেখেছে। জানা গেছে, কারাগারে যাওয়ার আগেই জোট নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা ওই তালিকায় বেশি গুরুত পেয়েছেন। এ ছাড়া এলাকায় জনপ্রিয়তা, আন্দোলন-সংগ্রামে অবদান—এসব বিষয়ও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর কারণে ওই খসড়া তালিকায় একাধিক বিকল্প রাখা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টরের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় রাখছে বিএনপি। তবে এবার জামায়াতকে আসন কম দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠলে নতুন মিত্রদেরও অন্তত ৫০টি আসন দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে সমন্বয় করা হবে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের অন্য দলগুলোর আসন।

এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় পেলেও আমাদের জন্য যথেষ্ট। শরিক দলের নেতারা কে কোন আসনে নির্বাচন করবেন তা দলগুলো দিয়েছে। আমরাও সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছি।’ প্রস্তুতি প্রায় শেষ বলে জানান তিনি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপি ৩০০ আসনের বিষয়েই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তবে জোটের শরিক দল ছাড়াও এখন বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। তাই প্রস্তুতি থাকলেও একেবারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসনসহ সিনিয়র বেশ কয়েকজন নেতা, জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের মনোনয়নের ব্যাপারে জোট বা বৃহত্তর ঐক্য হলেও ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সেই সব আসনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তই ধরা যায়।’

জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একাধিক জরিপ চালিয়েছেন। জরিপে এগিয়ে থাকা প্রার্থী, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের ফল এবং প্রার্থীর রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে সবুজ সংকেতও দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জোটের শরিকদের নিয়ে তারেক রহমান নিজস্ব লোকের মাধ্যমে একটি জরিপ চালিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং কয়েকজন বিশিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছেন দলের মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা। সর্বশেষ জরিপের কাজ শুরু হয়েছে গত মাসে। চলতি মাসেই তা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের এক নেতা।

ওই নেতা বলেন, ২০ দলীয় জোটের আসন বণ্টন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। এর খসড়া দলীয় প্রধান কারাগারে যাওয়ার আগেই প্রায় চূড়ান্ত করে গেছেন। এখন বিএনপি বৃহত্তর একটি ঐক্য করতে যাচ্ছে। সেখানে বিকল্পধারা, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জেএসডিসহ কয়েকটি দল রয়েছে। বৃহত্তর ঐক্য হলে এসব দলকে আসন ছাড় দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই নেতা বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মনোনয়ন পাচ্ছেন সেটি নিশ্চিত। তার বিকল্প হিসেবে দুজনের নাম ‘বি’ ও ‘সি’ ধাপে রয়েছে। কিন্তু বৃহত্তর ঐক্য হলে এই আসনে নির্বাচন করতে চাইলে বিকল্পধারার সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে ছেড়ে দিতে হবে। বিকল্পধারার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীও নির্বাচন করতে চাইবেন। তিনিও মুন্সীগঞ্জ বা ঢাকার কোনো আসনে মনোনয়ন চাইবেন। তাঁকে ঢাকা-৪ বা উত্তরার দিকে কোনো আসনে ছাড় দিতে হবে। এসব আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর তালিকা করে রেখেছে।

জামায়াত ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সম্ভাব্য প্রার্থী : বিএনপির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা জানান, বৃহত্তর ঐক্য হলে এবার ২০ দলীয় জোটের শরিকরা প্রত্যাশা অনুযায়ী আসনে ‘ছাড়’ পাবে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে ৩৫টি আসনে ছাড় দিয়েছিল বিএনপি। এবার আর দলটির জন্য এত আসন ছাড়তে হবে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারবে না জামায়াত। তবে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী দিতে পারবে দলটি। আর সমঝোতা হলে ‘স্বতন্ত্র’ ওই প্রার্থীকে সমর্থন দেবে বিএনপি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের বিজয়ী দুই প্রার্থীকে এবার বিএনপি ছাড় দিতে পারে। তাঁরা হলেন জামায়াতের এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ (কক্সবাজার-২) এবং আ ন ম শামসুল ইসলাম (চট্টগ্রাম-১৪)। পিরোজপুর-১ আসনে অবশ্য সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে জয় নিশ্চিত বলে বিএনপিতে আলোচনা আছে। তবে ওই আসন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারকেও ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

সূত্র মতে, জাতীয় পার্টির এই অংশের নেতাদের মধ্যে মনোনয়ন আলোচনায় যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা হলেন কাজী জাফর আহমদের মেয়ে জয়া কাজী (কুমিল্লা-১১), নওয়াব আলী আব্বাস (মৌলভীবাজার-২) এবং এ এইচ এম গোলাম রেজা (সাতক্ষীরা-৪)। কুমিল্লা-১১ ও সাতক্ষীরা-২ আসন ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে দেওয়া হয়েছিল।

যেসব আসন চায় জামায়াত : চলতি বছরের শুরুতে বিএনপির কাছে ৪৩টি আসনে দলীয় প্রার্থী চেয়ে তালিকা দিয়েছিল জামায়াত। ওই তালিকায় যাঁদের নাম ছিল তাঁরা হলেন মনিরুজ্জামান মন্টু (নীলফামারী-২), আজিজুল ইসলাম (নীলফামারী-৩), জামায়াতের কোনো নেতা (ঠাকুরগাঁও-২), জামায়াতের কোনো নেতা (দিনাজপুর-১), জামায়াতের কোনো নেতা (দিনাজপুর-৬), হাবিবুর রহমান (লালমনিরহাট-১), শাহ হাফিজুর রহমান (রংপুর-৫), নূর আলম মুকুল (কুড়িগ্রাম-৪), আবদুল আজিজ (গাইবান্ধা-১), নজরুল ইসলাম (গাইবান্ধা-৩), আবদুর রহিম সরকার (গাইবান্ধা-৪), নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), মো. লতিফুর রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), আতাউর রহমান (রাজশাহী-৩), রফিকুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৪), আলী আলম (সিরাজগঞ্জ-৫), মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কোনো সদস্য (পাবনা-১), জামায়াতের কোনো নেতা (পাবনা-৫), ছমিরউদ্দিন (মেহেরপুর-১), মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (চুয়াডাঙ্গা-২), মতিয়ার রহমান (ঝিনাইদহ-৩), আজিজুর রহমান (যশোর-১), আবু সাইদ মুহাম্মদ সাদাত হোসাইন (যশোর-২), অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ (বাগেরহাট-৩), শহীদুল ইসলাম (বাগেরহাট-৪), মিয়া গোলাম পরওয়ার (খুলনা-৫), শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুছ (খুলনা-৬), ইজ্জতউল্লাহ (সাতক্ষীরা-১), আবদুল খালেক মণ্ডল (সাতক্ষীরা-২), মুফতি রবিউল বাশার (সাতক্ষীরা-৩), গাজী নজরুল ইসলাম (সাতক্ষীরা-৪), দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলে (পিরোজপুর-১ ও ২), শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২), মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ছেলে (শেরপুর-১), অধ্যাপক জসিমউদ্দিন (ময়মনসিংহ-৬), ফরীদউদ্দিন (সিলেট-৫), মাওলানা হাবিবুর রহমান (সিলেট-৬), ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের (কুমিল্লা-১১), শামসুল ইসলাম (চট্টগ্রাম-১৪), হামিদুর রহমান আযাদ (কক্সবাজার-২) ও শাহজালাল চৌধুরী (কক্সবাজার-৪)। আসনগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, সিরাজগঞ্জ-৫, ময়মনসিংহ-৬, সাতক্ষীরা-১, পটুয়াখালী-২, কক্সবাজার-৪ এই ছয়টি আসনে জামায়াত নতুন করে লড়তে যাচ্ছে। গত নির্বাচনে এ আসনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থী ছিল না। সিরাজগঞ্জ-৫ ও কক্সবাজার-৪ আসনে জামায়াতের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান। এ কারণে আসন দুটিতে ছাড় দিতে নারাজ তাঁরা।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, জোটের বাকি ১৮টি দলকে ১০-১২টি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। এর মধ্যে এগিয়ে অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। এর পরে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি সর্বোচ্চ দুটি, বিজেপি দুটি, জাগপা একটি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম একটি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি একটি এবং মুসলিম লীগ একটি আসনে ছাড় পেতে পারে। বাকি বেশির ভাগ দলের নিবন্ধন নেই, নেতাদের আসনও নেই।

এলডিপির সম্ভাব্য প্রার্থী : বিএনপি সূত্রে জানা যায়, এলডিপি যেসব আসনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা চায় সেগুলো হলো চট্টগ্রাম-১৩ অলি আহমদ, কুমিল্লা-৭ আসনে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। এ ছাড়া দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল করিম আব্বাসীর জন্য নেত্রকোনা-১, আবদুল গণির জন্য মেহেরপুর-২ এবং আবু ইউসুফ খলিলুর রহমানের জন্য জয়পুরহাট-২ আসন চাইবে এলডিপি। তবে এগুলোতে ছাড় নিশ্চিত নয়।

আবদুল করিম আব্বাসী বিএনপির তিনবারের সংসদ সদস্য হলেও নেত্রকোনা-১ আসনে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ। ফলে তাঁকে বাদ দিয়ে আব্বাসীকে মনোনয়ন দেওয়া কঠিন।

তবে বিএনপির কাছে এলডিপি যেসব আসন আগেই চেয়ে রেখেছে সেগুলো হলো কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম (চট্টগ্রাম-১৪), ড. রেদোয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭), আবদুল করিম আব্বাসী (নেত্রকোনা-১), অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোহাম্মদ খলিলুর রহমান (জয়পুরহাট-২), অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (চাঁদপুর-৩), আবদুল গণি (মেহেরপুর-২), শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১), মো. কামালউদ্দিন মোস্তফা (মাগুরা-১), ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫), মো. নুরুল আলম (চট্টগ্রাম-৭), মো. আবু জাফর সিদ্দিকী (ময়মনসিংহ-২), মো. নেয়ামুল বশির (চাঁদপুর-৫), অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দীন চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৬), ড. জহিরুল হক (ঝালকাঠি-১), সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক (গোপালগঞ্জ-১), এম এ বাশার (ময়মনসিংহ-৮), মো. এয়াকুব আলী (চট্টগ্রাম-১২), মো. হামিদুর রহমান (ময়মনসিংহ-৯), অ্যাডভোকেট চৌধুরী এম এ খাইরুল কবির পাঠান (নেত্রকোনা-৫), তমিজ উদ্দীন টিটু (ঢাকা-৫), অধ্যাপিকা কারিমা খাতুন (বগুড়া-১), অধ্যাপিকা তপতী রানী কর (ময়মনসিংহ-৬), তৌহিদুল আনোয়ার (ঝালকাঠি-২), শফিউল আলম ভূঁইয়া (চট্টগ্রাম-১), অ্যাডভোকেট মোবারক হোসেন (টাঙ্গাইল-৪), অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান (বগুড়া-৩), অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান (মাদারীপুর-২), মোস্তফা কামাল চৌধুরী (নওগাঁ-১) ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান রূপা (সুনামগঞ্জ-৩)।

কল্যাণ পার্টি : দলীয় সূত্র মতে, জোট গঠনের সময়ই কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ইবরাহিম চট্টগ্রাম-৫ আসনে মনোনয়ন চান। একই আসনে মনোনয়ন চান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর নাছির উদ্দিন ও তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলালও। সব মিলিয়ে আসনটি বেশ ঝামেলাপূর্ণ বিএনপির কাছে। এর বাইরে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানের জন্য পাবনা-১ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হাসান মাহমুদের জন্য নারায়ণগঞ্জ-২ আসন চাইবে দলটি।

এলডিপি অবশ্য তালিকা দিয়ে বিএনপির কাছে বেশ কিছু আসন চেয়েছিল আগেই। ওই তালিকায় যাঁরা ছিলেন তাঁরা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম (চট্টগ্রাম-৪), এম এম আমিনুর রহমান (পাবনা-১), আলহাজ কাহির মাহমুদ এফসিএ (সিলেট-১), অ্যাডভোকেট আজাদ মাহবুব (পিরোজপুর-১), মো. ইলিয়াস (চট্টগ্রাম-৮), সাহিদুর রহমান তামান্না (কুমিল্লা-৬), ইসমাইল ফারুক চৌধুরী (কক্সবাজার সদর), অধ্যাপক ড. ইকবাল হাসান (নারায়ণগঞ্জ-২), আলী হোসাইন ফরায়েজি (কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম)।

বিজেপি : বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ভোলা-১ আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন, এটি নিশ্চিত। ঢাকা মহানগরীর একটি আসন থেকেও পার্থর নির্বাচন করার আগ্রহ আছে।

বিএনপির কাছে জমা দেওয়া তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা হলেন আন্দালিব রহমান পার্থ (ভোলা-১) ও আবদুল মতিন সাউদ (ঢাকা-৫)।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : দলটির চেয়ারম্যান মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস যশোর-৫ আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে নিশ্চিত। এ ছাড়া দলটির যেসব নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী তাঁরা হলেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মহীউদ্দিন ইকরাম, মুফতি রেজাউল করিম ও আব্দুর রব ইউসুফি। বিএনপি যেখানে আসন ছাড় দেবে সেখানেই তাঁরা নির্বাচন করবেন বলে জানানো হয়েছে।

জাগপা ও অন্যান্য দল : দিনাজপুর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত ছিল জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের। সম্প্রতি তিনি মারা যান। তবে তাঁর স্ত্রী রেহানা প্রধানকে ওই আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা আছে বিএনপির। দলের মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান বগুড়া-১ থেকে মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া মনোনয়ন নিয়ে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি (নীলফামারী-১), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামানের নাম আলোচনায় আছে। গানি নীলফামারী-১ ও কামরুজ্জামান কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে মনোনয়ন চান।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান পিরোজপুর-২ এবং ঢাকার মিরপুর পল্লবী আসন থেকে মনোনয়ন চাইছেন।

এ ছাড়া খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মুহম্মদ ইসহাক (পাবনা-১), মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের (হবিগঞ্জ-৪), জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান (দিনাজপুর-২) আসনে প্রার্থী হতে চান।

অনিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে এনপিপি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (নড়াইল-২), মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা (ঢাকা-১৩), এম ওয়াহিদুর রহমান কুমিল্লা-১০, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা (পাবনা-২), মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা (খুলনা-৩), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান (কিশোরগঞ্জ-৫), অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১), ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি (ময়মনসিংহ-৮), সাম্যবাদী দলের সাঈদ নারায়ণগঞ্জের যেকোনো আসন থেকে প্রার্থী হতে চান।

বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তাফা ভুইয়া বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করছেন। আমরা জোটগতভাবে বা একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরাও চাই সবার সমন্বয়ে একটি ঐক্য হোক। আমরা জোটের নেতৃত্বে থাকা দলের কাছে আমাদের প্রার্থী তালিকা দিয়েছি। তারা কী সিদ্ধান্ত দেয় সে হিসেবে আমরাও সিদ্ধান্ত নেব। তবে বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে কিছুটা ছাড় আমরা দেব।’

সূত্র: কালের কণ্ঠ

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর