ঢাকায় নতুন মাদক ‘খাত’

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেখতে চায়ের পাতার মতো। কিন্তু মাদক হিসেবে প্রচণ্ড শক্তি এই পাতায়। এই পাতার নাম ‘নিউ সাইকোট্রফিক সাবস্ট্যানসেস’ সংক্ষপে এনপিএস। ঢাকার মাদকাসক্তদের কাছে এর নাম হচ্ছে ‘খাত’ বা ‘খাট’।

ঢাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার জানান, এনপিএস মূলত চিবিয়ে বা জলে ফুটিয়ে চায়ের মতো খাওয়া হয়। তারপরে ইয়াবার মতোই নাকি অনুভব হয়। এই মাদকের নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। খাতে আসক্তরা মনোবিকলনে ভোগেন। সামাজিক ভাবে নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করেন।

সম্প্রতি ঢাকায় এনপিএস এর দুটি চালান বাজেয়াপ্ত করেছে শুল্ক বিভাগ। তারপরেই শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন এই মাদকের নাম। তবে কর্মকর্তারা মনে করছেন, তাদের চোখ এড়িয়ে এনপিএস হয়তো অনেক আগেই ঢাকায় পৌঁছেছে। না হলে মাদকাসক্তদের মধ্যে তার চাহিদা তৈরি হল কী ভাবে?

গত শনিবার দ্বিতীয় বারের মতো ধরা পড়ল এনপিএস এর চালান। ঢাকা বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের ভেতরে ১৬০ কিলোগ্রাম এনপিএস আটক করেছে শুল্ক বিভাগ। এর আগে গত ৩১শে আগস্ট প্রথম চালানটি আটক করেছিল তারা।

শুল্ক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার ওথেলো চৌধুরী জানান, গোয়েন্দারা আগেই খবর দিয়েছিল ৬ই সেপ্টেম্বর ভারতের মুম্বই থেকে বিমানে ৯টি এনপিএস এর চালান আসবে। ওই দিন ৯টি সন্দেহজনক কার্টন আসে। যা আটক করার পরে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। শনিবার কার্টনগুলি খোলার পর অবিকল ‘গ্রিন টি’র মতো দেখতে পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে এক জন ফরেন্সিক।

বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা করে জানান, সেগুলি এনপিএস মাদক। ওই শুল্ককর্তা জানান, এই পণ্যগুলির রপ্তানিকারীর নাম লেখা আছে জিয়াদ মহম্মদ ইউসুফ, ঠিকানা ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা। আর আমদানিকারী ঢাকার এশা এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানাও দেওয়া রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বিষয়টি তদন্ত করছেন।

গত ৩১শে আগস্টও এনপিএস এর চালানটি এসেছিল আদ্দিস আবাবা থেকে। জিয়াদ মহম্মদ ইউসুফ নামে এক ব্যক্তি ঢাকার নওয়াহিন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চালানটি পাঠিয়েছিলেন। চালান বাজেয়াপ্তের পরে শুল্ক বিভাগ দুই দফায় অভিযান চালিয়ে বিমানবন্দর ও শান্তিনগর প্লাজা থেকে মোট ৮৬১ কেজি এনপিএস আটক করে।

নাজিম নামে এক জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। শুল্ক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম শিকদার জানান, ১৯৬১ সালের প্রচলিত মাদক আইন অথবা ১৯৭১ সালের ওষুধ আইনে এনপিএস নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয়। যদিও স্বাস্থ্যের পক্ষে এটা প্রচ- ক্ষতিকর। তাই এই মাদক নিয়ে তাদের একটু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

সূত্রঃ আনন্দবাজার

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর