শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে যা বললেন কাদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা একটু উদ্বিগ্ন, আমরা বিচলিত। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জন্য নয়। আজকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে বিএনপি তার সাম্প্রদায়িক দোসররা সরকার হঠানোর নিরাপদ সড়ক খুঁজছে।

তিনি বলেন, বিএনপি কোটা আন্দোলনে ভর করে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নয় বছরের নয় মিনিটও রাস্তায় বিক্ষোভ করতে পারেনি। সে দগদগে ব্যর্থতার পরে তার দোসররা কোটা আন্দোলনে ভর করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা সোয়ার হয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবির আন্দোলনে। তার সাইন অ্যান্ড সিম্পটম আমরা গত ৫ দিন ধরে লক্ষ করছি।

শুক্রবার (৩ আগস্ট) দুপুরে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক তার সরকার স্বীকার করেছে। কিন্তু এ যৌক্তিক আন্দোলনকে অযৌক্তিক পথে উসকানি দিয়ে ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার বিষয় অশুভ চক্রান্ত লক্ষ করছি। আমরা এও লক্ষ করছি, এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মিছিলে ঢুকে কীভাবে অশ্লীল, বিশ্রী ও অশালীন স্লোগানের উসকানি দিচ্ছে একটি রাজনীতিক মতলবী মহল। তারা এই শিশুদের সমাবেশে খাবার পানি সরবরাহ করছে। এবং উসকানি দিচ্ছে আরও উত্তেজিত হওয়ার জন্য। আমরা লক্ষ করছি এই শিক্ষার্থীরা কিছু কিছু এলাকা থেকে এই কুচক্রী মহলদের বের করে দিয়েছে। এই মহলটি সন্ধ্যার পর বেশি তৎপর হয়। সন্ধ্যার পর এখানে অনেক ঘটনা ঘটেছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রী, এমপি অনেকেই নাজেহাল হয়েছেন। আমরা মনে করি শিক্ষার্থীরা তাদের নাজেহাল করেনি। অনুপ্রবেশ করে মতলবি মহলটি অপকর্ম করেছে পুলিশ বিজিবি অফিসার ও ভদ্রলোককে অপমান অপদস্থ করেছে। সন্ধ্যার পর রাতের অন্ধকারে কার্যকলাপ শুরু করেছে। আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের অনুরোধ করেছি। কোনো প্রকার উসকানির ফাঁদে না পরে সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছি। শুধু তারা লক্ষ রাখবে কারা কারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করছে। অনুপ্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে শিশুদের যৌক্তিক আন্দোলনকে জনগণের কাছে ভুল মেসেজ দিতে চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর আশ্চর্য দ্রুততার সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করেছে। একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা কীভাবে হয়েছে তা গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি মনিটরিং করছে। তার নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। কোনো দুর্ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা একটি মূল বিষয় সেটা আমরা করেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন রমিজ উদ্দিন স্কুলের পাশে একটা আন্ডার পাস নির্মাণের যে দাবি সেটা পূরণে বিষয়ে তড়িত ব্যবস্থা নিতে। অবশ্য এর আগে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এর ডিজাইন করে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে একটা প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। সেনাবাহিনীর সে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সেনাবাহিনী এই আন্ডার পাস নির্মাণের কাজ অচিরেই শুরু করতে যাচ্ছে।

সড়ক পরিবহন আইনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনমন্ত্রণলয় আগামী সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইন উত্থাপন করবে। এবং সেটি বিল আকারে পাস হবে। এরপরে এই সরকারের শেষ অধিবেশন সম্ভবত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এ আইনটি পাস হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। কোনো প্রকার ঘাটতি শৈথিল্য নেই।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের প্রতিবাদী কণ্ঠকে সম্মান করি বলি, তোমার আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, আগামী দিনের নেতা। তোমরা কাছে অনুরোধ করতে চাই। তোমরা শান্ত হও। তোমরা দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে তোমাদের সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণের কাজে লাগাবে। উসকানিতে অবশ্য তোমরা বিভ্রান্ত হবে না। আমি ছাত্র-ছাত্রীর বক্তব্য শুনেছি। তাদের মধ্যে শুভ বোধ আছে। এই শুভ বোধ জাগ্রত হয়েছে। তা আমাদের কাজে লাগবে। প্লিজ সহযোগিতা করুন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন-দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন ও ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর