বাগেরহাটে সবজির পাইকার নেই বাম্পার ফলনেও কৃষক হতাশ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাগেরহাটের ৯উপজেলা সবজির বাম্পার ফলন হলেও বাজারে সবজির ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশায় ভূগছে বাগেরহাটের কৃষকেরা। কৃষকের মুখে হাসি নেই। আগামীতে এ চাষাবাদের আগ্রহ অনেকাংশে কমবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় অনেক কৃষকেরা।বহু কষ্টে উৎপাদিত ফসলের হঠাৎ দরপতনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আসতে চায় না। বাইরের বড় বড় পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী বাজারে না থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

তবে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা ফায়দা লুটছে।
বাগেরহাটে ৯উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মওসুমে এ উপজেলায় ১৮৫২ একর জমিতে করল্লা, ২ হাজার ৪৯৪ একর জমিতে শসা, ঢেঁড়স ৯৪ একরে, চালকুমড়া ৯৬ একরে, মিষ্টিকুমড়া ৯৬ একরে, বেগুন ৯৬ একরে, বরবটি ২৭৩ একরে, চিচিঙ্গা ৩২৩ একরে ও ৬২ একর জমিতে পুঁইশাকসহ মোট তিন হাজার ২১১ একর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে।

বাগেরহাটের এ ৯উপজেলায় ২৩৬৫৬২ জন কৃষক চাষি রয়েছেন। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি। উপজেলার সুরশাইল, কুরমনি, পাটরপাড়া, খাশেরহাট, দড়িউমাজুড়ি, বাখেরগঞ্জ, খড়মখালী, শৈলদাহ, কালিগঞ্জ, হিজলা, নালুয়া, বড়বাড়িয়া ও ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মৎস্য চাষের সাথে ঘেরের চারপাশের বেড়িতে (পাড়ে) চাষিরা সবজির চাষ করেছেন।

এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শসা, করল্লা, বরবটি, চালকুমড়া, লাউ ও ঝিঙেসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু মওসুমের শুরুতেই আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কারণ ব্যাংকঋণ ও এনজিওসহ সুদখোর মহাজনদের চাপে অনেকেরই এখন নাভিঃশ্বাস অবস্থা। এত কিছুর মধ্যেও আড়তদারদের সিন্ডিকেট ও ইজারাদারদের অধিক মাত্রায় খাজনা আদায়ের অভিযোগও তুলেছেন সবজি চাষিরা।

চিতলমারীর বিভিন্ন আড়ত ঘুরে জানা গেছে, এখানে প্রতি মণ করল্লা ৬৫০-৭৫০, শসা ৩২০-৪৫০, বরবটি ৪০০, পুঁইশাক ৪০০, বেগুন ৯০০, কুশি ৬০০ ও ঝিঙে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; যা আগের চেয়ে অনেক কম দাম। তাই হঠাৎ বাজার দর পড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে পাইকারি সবজি ক্রেতা মন্টু মহাজন জানান, বর্তমানে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আসতে চায় না। তাই এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এবার এ উপজেলায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারজাতকরণের ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর