দীর্ঘ অপেক্ষার পর চালু হচ্ছে বাড্ডা ইউলুপ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানী বাড্ডা-রামপুরা এলাকার দীর্ঘ দিনের যানজট ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে চালু হতে যাচ্ছে প্রগতি সরণির বাড্ডা ইউলুপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকেল ৫টায় এটি উদ্বোধন করবেন।

মেরুল বাড্ডার এই ইউলুপটি চালু হলে যানবাহনগুলো প্রগতি সরণি হয়ে ইউলুপ দিয়ে বাঁক নিয়ে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা বা মালিবাগ অভিমুখে সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। পাশাপাশি বাড্ডা পয়েন্টে সৃষ্ট ব্যাপক যানজটেরও নিরসন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই ইউলুপটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার পর পরই সাধারণের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

হাতিরঝিলের মোড় থেকে রামপুরা সেতু হয়ে গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডের দিকে এগোলে মেরুল বাড্ডা। সেখানেই বাড্ডা প্রান্তের ইউলুপ। বাড্ডায় এই ইউলুপ চালু হলে রামপুরা, বনশ্রী বা আফতাবনগর যাওয়ার জন্য বিভিন্ন গাড়ি সহজে লেন পরিবর্তন করতে পারবে।

এ ছাড়া এয়ারপোর্ট, মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর, গুলশান ও কুড়িল যাওয়ার জন্য রাস্তার লেনটিও হবে ট্রাফিক সিগন্যালমুক্ত। যেসব গাড়ির প্রয়োজন হবে, সেগুলো সহজেই ইউলুপ ব্যবহার করে লেন পরিবর্তন করতে পারবে। এর ফলে ট্রাফিক সিগন্যালের কারণে এখন যে যানজট সৃষ্টি হয়, তা আর থাকবে না।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে যানজট প্রবণ মালিবাগ-নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা ও যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে রামপুরা ও বাড্ডা প্রান্তে দুটি ইউলুপ নির্মাণের পরিকল্পনা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

এর মধ্যে গত বছরের ২৫ জুন রামপুরা প্রান্তের (দক্ষিণ) ইউলুপটি চালু হয়। দ্বিতীয়টি বাড্ডা ইউলুপ। গুলশান-বাড্ডা সংযোগ সড়কের কাছে মেরুল বাড্ডায় এর অবস্থান।

বাড্ডা ইউলুপটি দৈর্ঘ্যে ৪৫০ ও প্রস্থে ১০ মিটার। প্রকল্প ব্যয় প্রায় ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু দুই বছরেরও বেশি সময় আগে ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে শুরু হওয়া বাড্ডা ইউলুপটির কাজ চলেছে কচ্ছপ গতিতে। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে এর প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। তবে বাড্ডা ইউলুপটি চালুর পরে এই এলাকার যানজট নিরসন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (রাজউক) জামাল আক্তার ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের মাঝামাঝি হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন। নির্মাণকাজের দায়িত্বে আছে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

গত বছরের ডিসেম্বরে ইউলুপটি চালুর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। এরপর পঞ্চমবারের মতো সময় বাড়িয়ে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আজ চালু হতে যাচ্ছে এই ইউলুপটি।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বাড্ডায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে শনিবার দুপুর ৩টা থেকে বাড্ডা ও হাতিরঝিল এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।

শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ জুলাই বিকেল ৫টায় বাড্ডা ইউলুপ উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন উপলক্ষে বিকেল ৩টা থেকে রামপুরা টিভি ভবন এলাকার বাড্ডা ইউলুপ এবং সমগ্র হাতিরঝিল এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর