রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের আরও সমর্থন দরকার: বিশ্বব্যাংক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, সহিংসতার শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে সাহায্য করতে বিশ্বের কাছ থেকে বাংলাদেশের আরও সমর্থন দরকার।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে দুই দিনের সফর শেষে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।

সফরকালে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র।

বিবৃতিতে জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘আমি সংকটের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছি। আমি নারী ও পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের কঠিন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে এবং নিজেদের গ্রামে ফিরে যাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় এখনও দৃঢ় রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তার সীমান্ত উন্মুক্ত রেখে এবং শরণার্থীদের সহায়তা দিয়ে মহান কাজ করেছে। তবে আরও অনেক কিছুই করা দরকার। বর্ষাকালের অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও আসন্ন ঘূর্ণিঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’

গত শনিবার বিকেলে ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। আর শনিবার রাত ২টায় ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব। জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতেই তারা বাংলাদেশ সফরে আসেন।

রোববার অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট কিম। একই দিনে জাতিসংঘ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় তারা রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট দু’জনেই রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখায় তাদের সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন।

বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মহানুভবতার প্রশংসা করে শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘ব্যাপক শরণার্থী আগমনের মাধ্যমে সৃষ্ট ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে তার চমকপ্রদ উন্নয়ন অগ্রগতি ধরে রাখতে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক। আমরা ৪৮ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা এই সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর