কুকুরের সহমর্মিতা

মানুষের জন্য মানুষের সহমর্মিতা দিনকে দিন কমছে। অন্যের বিপন্নতা দেখেও মানুষ আজকাল উদাসীন, বিমুখ। সবাই ভাবছে, অন্য কেউ এগিয়ে যাক, আমি কেন ঝামেলায় জড়াবো। এই মনোভাব শহুরে মানুষের মধ্যে অনেক বেশি প্রকট। ইট-কাঠ-পাথরের ঘেরাটোপে বন্দি থাকতে থাকতে শহুরে মানুষের মনও হয়ে পড়েছে নিরেট, যান্ত্রিক।

মানুষ দিনে দিনে অনুভূতিশূন্য হয়ে পড়লেও ইতর প্রাণিরা হারায়নি তাদের অনুভূতি, অন্যের জন্য সহমর্মিতা। কোনো প্রাণি বিপন্ন হলে তাকে রক্ষার জন্য তারা জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়ে বসে। এখানে নেই কোনো প্রতিদান পাওয়ার আশা। স্রেফ প্রাণের টানেই তারা এমনটি করে থাকে। এরই সর্বশেষ নজির রেখেছে একটি কুকুর।

নির্জন স্থানে একটি পরিত্যক্ত জলাধারে আটকেপড়া অন্য একটি কুকুরকে দেখতে প্রায় টিল্লি নামের একটি কুকুর। সেখানেই প্রায় একটি সপ্তাহ কাটিয়ে দেয় সে। মাঝেমাঝে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করেছে, ঘেউ করেছে। পর মুহূর্তে ফিরে এসেছে বিপন্ন কুকুরটির কাছে।

এই সময়টায় নিজেও ক্ষুধার্ত থেকেছে সে কিন্তু বিপন্ন কুকুরটিকে ছেড়ে আসেনি।কুকুরের এই সহমর্মিতার ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ভাশন দ্বীপে।

এমি কেরি নামে ওই দ্বীপের এক পশু সুরক্ষক জানান, টিল্লি নামের কুকুরটি লোকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য টানা একটি সপ্তাহ মরিয়া চেষ্টা করে গেছে। বিপন্ন কুকুরটির নাম ফিবিস। মঙ্গলবার তারা জলাধারে আটকেপড়া ফিবিসের পাশে টিল্লিকে দেখতে পান। ব্যস্ত সমস্ত হয়ে টিল্লিকে আশেপাশে ছুটোছুটি করতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের খবর দেন।

তারা জানান, লাল-শাদা রঙের ওই কুকুরটা এদিক-ওদিক ছুটোছুটি ও ঘেউ ঘেউ করে আবার দ্রুত একটা ঝোঁপের দিকে ফিরে যাচ্ছিল। এসব দেখে তাদের মনে কৌতূহল জাগে। অগত্যা তারা পশু সুরক্ষা দপ্তরকে জানালে তারা ছুটে আসেন।

এদিকে কুকুর দুটিকে খুঁজে না পেয়ে ওদের দুই মালিক পশু সুরক্ষা দপ্তরকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তারা কুকুর দুটিকে পাচ্ছিলেন না।
টিল্লি যা করেছে, এক কথায় তা অসাধারণ।বলছিলেন এমি কেরি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর