অবশেষে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে পানি প্রবেশ বন্ধ হয়েছে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রশাসন ও স্থানীয়দের ত্বরিত পদক্ষেপে টাঙ্গুয়ার হাওরের নাওটানার ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ অবশেষে বন্ধ হয়েছে। আজ শনিবার সকালেই শংকামুক্ত হয় হাওর। দুপুরে পানি প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার সারা রাত এই বাঁধে কাজ করেছেন স্থানীয় কৃষক ও টাঙ্গুয়ার হাওর সহব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা। রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব বাঁধে উপস্থিত থেকে কাজ তদারকি করেন। সকালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বাঁধের কাজ তদারকি করতে যান।

গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মাছ শিকারীরা টাঙ্গুয়ার হাওরের বোরো ফসলরক্ষা নাওটানা বাঁধটি কেটে দেয়। এ কারণে পাটলাই নদীপাড়ের গোলাভারি গ্রামের কাছ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছিল টাঙ্গুয়ার হাওরে। ফলে ধর্মপাশা এবং তাহিরপুর উপজেলার ৮৮ গ্রামের কৃষকের ফসল পানিতে প্লাবিত হবার আশংকা দেখা দিয়েছিল।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর বাঁধের ভাঙন অংশে বাঁশ পোঁতা হয়। ভোর রাত থেকে মাটির বস্তা ফেলে পানি প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা শুরু হয়। সকাল ৯ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান,’শত শত মানুষের চেষ্টায় বাঁধের ভাঙন অংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

পানি এখন আর হাওরে ঢুকছে না।’ দুপুর ১২ টায় উপস্থিত লোকজর জানান, বাঁধ আপাতত নিরাপদ।  টাঙ্গুয়ার হাওর সমাজভিত্তিক টেকসই ব্যবস্থাপনা কমিটির উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস ছত্তার বলেন,’প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপে ৮৮ গ্রামের কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল রক্ষা পেয়েছে। এলাকার মানুষ যেমন ভাঙন ঠেকাতে আন্তরিক ছিলেন, তেমনি প্র্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও আন্তরিক ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারা রাত বাঁধে কাটিয়েছেন। জেলা প্রশাসক কিছুক্ষণ পর পরই খোঁজ নিয়েছেন।

তাদের সকলের প্রচেষ্টায় হাওরের ফসল রক্ষা পেয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন,’আমরা কাজ করেছি। টাকা কোথা থেকে আসবে, চিন্তা করিনি। যেখানে যা লাগে করছি। শনিবার সারা দিন কাজ হয়েছে। রাতেও কাজ হবে। আমরা বাঁধকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে চাই।’ পূর্ণেন্দু দেব বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৩০০ শ্রমিক ছিল। এর বাইরেও অসংখ্য কৃষক এসে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন। স্রোতের মধ্যে বাঁশ পুততে অনেক কষ্ট হয়েছে।

প্রবল স্রোত থাকায় মানুষকে নামানোও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত্ম সকল বিপদ কেটেছে।’ সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরের এই অংশের ভাঙন দ্রম্নত বন্ধ করা না গেলে হাওরের কিছু ফসলি জমি ডুবে যেত। আমাদের প্রচেষ্টা ছিল যাতে একজন কৃষকের ফসলও নষ্ট না হয়। সেজন্য সারারাত স্থানীয় মানুষের সহায়তায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্বাবধানে ওখানে কাজ হয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর