সংসদ ছাড়লেই প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় পার্টিকে কাছে পেতে বিএনপি প্রয়োজনে প্রাধানমন্ত্রীত্ব দিতেও রাজি। লন্ডন থেকে জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এরশাদের জাতীয় পার্টির সঙ্গে ঐক্যের ব্যাপারে তারেক জিয়া যতটা আগ্রহী, ঠিক ততটাই আনাগ্রহী বিএনপি নেতারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাদের বলেছেন, ‘এরশাদের ওপর নির্ভর করা হবে আত্মহত্যার শামিল।’ তাছাড়া, এরশাদের সঙ্গে ঐক্য হলে, গণফোরাম, বিকল্প ধারার মতো দলগুলোকে জোটে টানা কঠিন হবে। কিন্তু তারেক জিয়া ‘যেকোনো মূল্যে’ এরশাদকে চান। তবে, বিএনপির একটি সূত্র বলছে, এরশাদকে কাছে টানা আসলে একটা কৌশল। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে জাতীয় পার্টিকে কেড়ে নিতেই এই কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বিএনপি। বিশেষ করে তারেক জিয়ার মূল লক্ষ্য হলো, জাতীয় পার্টির মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যদর পদত্যাগ করানো। তাহলে এই সংসদ অর্থহীন হয়ে পড়বে। এনিয়ে জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদেরের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে বিএনপির নেতারা। ওই বৈঠকে ঐক্যের প্রথম শর্তই দেওয়া হয়েছিল যে, জাপার এমপিদের সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় পার্টির জিএম কাদের পদত্যাগের ব্যাপারে ইতিবাচক হলেও রওশন এরশাদ পদত্যাগের পক্ষে নন। এমপিদের মধ্যে সিংহভাগই রওশন এরশাদের পক্ষে। তবে, জাতীয় পার্টিকে বাগে আনতে নানা রকম টোপ দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। সম্প্রতি এরশাদ জিএম কাদেরকে জিঙ্গেস করেন, বিএনপির সঙ্গে জোট করলে কত আসন ছেড়ে দেবে। জিএম কাদের বিষয়টি বিএনপির দুজন নেতাকে বলেন। ওই দুজন নেতা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। লন্ডন থেকে বলা হয়, এরশাদ সাহেব বলুক তিনি কত আসন চান। এরপর পয়লা বৈশাখে এরশাদ ৭০ আসন এবং ১২ জন মন্ত্রী দাবি করেন। প্রকাশ্যে এরশাদের এই দাবির পর তারেক জিয়া জানিয়েছেন, বাজেট অধিবেশনের আগে যদি জাতীয় পার্টির এমপিরা একযোগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন, তাহলে ৭০ আসন এমনকি প্রযোজনে প্রধানমন্ত্রীত্ব দেওয়া হবে জাপাকে।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রীত্বের টোপ দেওয়া হয়েছে আসলে রওশন এরশাদের দিকে তাকিয়ে। কারণ, এরশাদ প্রধানমন্ত্রী হবেন না। রাষ্ট্রপতি ছাড়া তিনি কোনো পদ নেবেন না বলেও জানিয়েছেন। তাই জাতীয় পার্টি থেকে প্রধানমন্ত্রী হলে, এই পদের দাবিদার হলেন রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদের। তাই সংসদ থেকে পদত্যাগের ক্ষেত্রে এটা রওশন এরশাদের জন্য লোভনীয় টোপ হতে পারে, এই বিবেচনা থেকেই বিএনপি এমন প্রস্তাব দিচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি দুটি দলেরই মূল চিন্তা হলো প্রতারণা ও মিথ্যাচার। দুটি দলই পরস্পরের সঙ্গে প্রতারণার খেলায় মেতেছে। শেষ পর্যন্ত জাপা-বিএনপির জোট হবে না, আর জাপার এমপিরা পদত্যাগও করবে না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর