কোনো পুরস্কারের আশায় মুক্তিযুদ্ধ করিনি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলব, আমি কোনো পুরস্কারের আশায় মুক্তিযুদ্ধ করিনি। তখনকার প্রেক্ষাপটে কোনো মুক্তিযোদ্ধাই পুরস্কারের আশায় মুক্তিযুদ্ধ করেননি। মুক্তিযোদ্ধাদের বৈষয়িক পুরষ্কার দিয়ে অবদানের প্রতিদান দিতে হবে, এমন ধারণা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার সামিল।

বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন দেশে বাম রাজনীতির পথিকৃত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ডাকসুর প্রথম ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

তিনি বলেন, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অনেকে বলছেন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পুরস্কৃত ও সম্মানিত করার আরও একশ’ একটা পথ আছে। সেই পথ অবলম্বন না করে তাদের সন্তানদের বা উত্তরাধিকারীদের বংশ পরম্পরায় জনপ্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক না। মুক্তিযোদ্ধাদের বৈষয়িক পুরস্কার দিয়ে অবদানের প্রতিদান দিতে হবে, এমন ধারণা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার শামিল। সুতরাং কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করাও ঠিক হবে না আবার যেভাবে আছে সেটি বহাল রাখাও ঠিক হবে না। এটার সংস্কার জরুরি।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের কথায় উঠে এসেছে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশ্নফাঁস, শিক্ষাব্যবস্থা, চাকরির বয়সসীমা, ডাকসু নির্বাচনসহ নানা প্রসঙ্গ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনের প্রতিবেদক আলী আদনান।

প্রশ্ন: তরুণ চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে একটা অংশ কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করছে । একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনি বিদ্যমান কোটা পদ্ধতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ জনপ্রশাসনে নিয়োগ কীভাবে দেওয়া হবে সেই প্রশ্নেই এই প্রসঙ্গটা এসেছে। একপক্ষ বলছে, কোটা উঠিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া উচিত। অন্যপক্ষ বলছে কোটা যেভাবে আছে সেভাবেই থাকা উচিত। আমার মতে এই দুই মতের কোনোটাই সঠিক নয়। আমাদের প্রশাসন দক্ষ ও মেধাবী লোকদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন। জাতির স্বার্থেই সেটা প্রয়োজন। কিন্তু জাতির স্বার্থে এ বিষয়ে নজর দিতে গেলে আরও কিছু বিষয় চলে আসে। সেক্ষেত্রে কিছু নীতিগত বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এখানে প্রশ্ন এসে যায়, মেধার ভিত্তিতে যে নিয়োগ সেখানে মেধার পরিমাপ কীভাবে হবে? বিশেষ করে বর্তমানে প্রশ্নফাঁসের যে রমরমা যুগ চলছে সেখানে কেবলমাত্র নম্বর দেখে মেধা যাচাই করা যায় না। দ্বিতীয়ত, কাগজ কলম বা সার্টিফিকেটনির্ভর বিদ্যা খুব একটা কাজে লাগে না। আবার দেখা গেলো মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিলাম। এক্ষেত্রে কেউ কেউ বাস্তব অভিজ্ঞতায় চর্চার ফলে মেধা বাড়তে থাকে। আবার কেউ কেউ নিচের দিকে পড়ে যেতে থাকে। সেজন্য আমি বলি, নিয়োগ যেভাবেই হোক, পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা দরকার। যদিও শিক্ষাক্ষেত্রের নানা বিতর্কের কারণে আমাদের মেধাবী চিহ্নিত করতে কষ্ট হবে তবু আমি বলব, জনপ্রশাসন নিরপেক্ষ, দক্ষ ও বিতর্কের ঊর্দ্ধের লোকদের দিয়ে গঠন করা উচিত যারা অন্তত মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারে। আমি আগেই বলেছি, জাতীয় স্বার্থে মেধাবী ও দক্ষ লোকদের দিয়ে যেমন জনপ্রশাসন গড়ে তোলা প্রয়োজন তেমনি জাতীয় স্বার্থে আরও অনেক কিছু প্রয়োজন। তার মধ্যে অন্যতম হলো সমতা। সমতার নীতি কার্যকর করতে হবে। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও একটা অংশ। জনপ্রশাসনে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এটারও প্রতিফলন হওয়া উচিত।

যেহেতু যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজ অসম বিকাশের ফলে গড়ে উঠেছে, সেহেতু সবার ক্ষেত্রে মেধা বিবেচনা করলে চলবে না। আমাদের সমাজে এগিয়ে থাকা মানুষ যেমন আছে, তেমন অনগ্রসর জনগোষ্ঠীও আছে। এগিয়ে থাকা ও পিছিয়ে থাকা মানুষের মধ্যে যদি আমি সমানে সমানে চিন্তা করি, তাহলে যারা অনগ্রসর তারা শুধু পিছিয়েই থাকবে না বরং তাদের পিছিয়ে পড়া অবস্থা আরও নিচের দিকে চলে যাবে। পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোকে এগিয়ে আনতেই তাদেরকে কিছু বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটাকে ইংরজিতে বলা হয় পজিটিভ ডিসক্রিমিনেশন বা ইতিবাচক বৈষম্য। এর মধ্য দিয়ে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে না পারলে আমরা কিন্তু সমতার জায়গায় পৌঁছাতে পারব না। সেজন্য আমি মনে করি নারী, আদিবাসীদের জন্য কিছু কোটা থাকা প্রয়োজন। যা নির্দিষ্ট সময় পরপর পুণর্বিবেচনা করতে হবে।

প্রশ্ন: একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে `মুক্তিযোদ্ধা কোটা` থাকাটা কতটা যৌক্তিক বলে আপনি মনে করেন?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ আমরা পাকিস্তানের নবসংস্করণ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। পাকিস্তানের চিন্তাধারা এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রগতিশীল ধারায় নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রনয়ণ করার জন্যই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের জনপ্রশাসনও মুক্তিযুদ্ধের আলোকে সাজানো দরকার। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রে তাদেরকে দিয়েই জনপ্রশাসন সাজানো হবে সেটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সে সময়কাল তো পার হয়ে গেছে। এই সময়কালের মধ্যে যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিল তারা জনপ্রশাসনে কাজ করে ফেলেছে। এখন তাদের সন্তানরা সুযোগ পাচ্ছে। এরপর আসছে তাদের নাতিপুতিরা। এটা কোনো অবস্থায় যুক্তিযুক্ত না। অনেকে বলছে, এতে করে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পুরস্কৃত ও সম্মানিত করার আরও একশ একটা পথ আছে। সেই পথ অবলম্বন না করে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের বা উত্তরাধিকারিদের বংশ পরম্পরায় জনপ্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক না। আবার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা সবসময় যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে তাও নয়। আমি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলব, আমি কোনো পুরস্কারের আশায় মুক্তিযুদ্ধ করিনি। তখনকার প্রেক্ষাপটে কোনো মুক্তিযোদ্ধাই পুরস্কারের আশায় মুক্তিযুদ্ধ করেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের বৈষয়িক পুরষ্কার দিতে তাদের অবদানের প্রতিদান দিতে হবে, এমন ধারণা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার সামিল। সুতরাং কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করাও ঠিক না আবার যেভাবে আছে সেভাবে বহাল রাখাও ঠিক না। এটার সংস্কার করা উচিত।

প্রশ্ন: চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন অনেকে। এ আন্দোলন কতটুকু যৌক্তিক ?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ দুটি দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনা করা যায়। প্রথমত, কোনো বয়সে একজন মানুষের দক্ষতা ও প্রতিভা সর্বোচ্চ ভাল অবস্থানে আসে। দ্বিতীয়ত, এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থী পাস করে বের হতে হতে কত বয়স লাগে? টানা পড়ালেখা করলে কত বয়স লাগে? এছাড়া দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের অনেক সময় পড়ালেখার মাঝে মধ্যে গ্যাপ যায়। সেসবও বিবেচনায় আনা উচিত। এসব বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েই চাকরির বয়সসীমা নির্ধারণ করা উচিত।

প্রশ্ন: আপনি নিজেই কিছুক্ষণ আগে বললেন, প্রশ্নফাঁসের কারণে প্রকৃত মেধাবী নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এই প্রশ্নফাঁসের জন্য আপনি কাকে দায়ী করবেন?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: প্রশ্ন ফাঁসের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট দায়ী। আমাদের সবকিছু পণ্যায়ন হয়ে গেছে। আশপাশে দৃশ্য ও অদৃশ্য যা কিছু আছে সবই কেনা বেচার সামগ্রী। প্যারাসিটেমল থেকে বাজারের আলু-পটল যেমন কিনতে হয়, তেমনি সার্টিফিকেটও কিনতে হয়। `জ্ঞান` যে টাকা দিয়ে বিক্রি হয় না সেই বোধটা কিন্তু আমরা হারিয়ে ফেলেছি। বাজার অর্থনীতিতে ভোগবাদ, প্রদর্শনবাদের ও পণ্যায়নের প্রতিযোগিতা চলছে। আগে আমরা পড়তাম,‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই, এখন হচ্ছে সবার উপরে সার্টিফিকেট সত্য তাহার উপরে নাই।’ এর জন্যই অশুভ চক্র অর্থ লেনদেনের ভেতর দিয়ে সার্টিফিকেট ফাঁসের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

প্রশ্ন: আমরা কীভাবে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ এই প্রশ্নটার উত্তর একদিকে সহজ, অন্যদিকে কঠিন। কঠিন এই অর্থে, `সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেব কোথা` এমন একটা পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। আর সহজ এই অর্থে, নতুন করে পথ খুঁজে নেওয়ার কিছু নাই। পথ আমাদের আছে। তা হলো, মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে আমরা যে রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে চেয়েছিলাম, তা বিনির্মাণ করা।

প্রশ্ন: শিক্ষাক্ষেত্রে কোন কোন গলদগুলো আপনার চোখে পড়ে?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ দু`টা গলদ খুব স্পষ্ট। একটা হলো বাণিজ্যিকীকরণ, অন্যটা সাম্প্রদায়িকীকরণ। আমরা আগে লড়াই করেছি, মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে অর্জন করেছি। একধারার একটা সার্বজনীন শিক্ষা পদ্ধতি আমাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের সে অধিকার না দিয়ে বিকৃতি সাধন করেছে। ব্যয়বহুল করার মাধ্যমে একটা অংশকে শিক্ষা বঞ্চিত রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় খরচ কমিয়ে দিয়ে ব্যক্তিগত খরচ হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ঘটানো হয়েছে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার্থে এটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অন্যদিকে আমরা দেখি কয়েক ধারার শিক্ষা। শিক্ষার এই বৈষম্যে প্রজন্মের মধ্যে ভেদাভেদ দেখা দিচ্ছে।

প্রশ্ন: পাঠ্যসূচিতে ধর্মীয় শিক্ষা কী আপনি সমর্থন করেন?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ সমর্থন করি। সমর্থন করবো না কেন? তবে সেটা থাকা উচিত উচ্চতর পর্যায়ে। কেউ রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ে, কেউ অর্থনীতি পড়ে, কেউ বিজ্ঞান বা দর্শন পড়ে। ঠিক তেমনি কেউ চাইলে ধর্ম পড়তে পারে। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত বাংলা, অংক, ভূগোল, ইতিহাস, সাধারণ জ্ঞান – এরকম মৌলিক বিষয়গুলো পারদর্শী করে তোলা উচিত। সেক্ষেত্রে একমুখী শিক্ষাই কাম্য। আমি মনে করি ক্লাস এইট পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় এনে সার্বজনীন শিক্ষা চালু করা উচিত।

প্রশ্ন: বিশ্ব অর্থনীতির এই বাস্তবতায় শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ থেকে কী বেরিয়ে আসা সম্ভব?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ অবশ্যই সম্ভব। আমরা দেখি, অনেক রাষ্ট্র সেটা করতে সক্ষম হয়েছে। এবং তাদের অগ্রগতিও অনেক দূর হয়েছে। কিউবা তার অন্যতম উদাহরণ। চীন এক্ষেত্রে আজকে পৃথিবীতে একটি দৃষ্টান্ত। ভিয়েতরামও সফল হয়েছে। অর্থাৎ যে রাষ্ট্রগুলো সমাজতন্ত্রের পথে এগিয়েছে তারা প্রত্যেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে সফল হয়েছে।

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নেওয়ার পরও আমাদের যুব সমাজে বড় একটি অংশ বেকার। কেন? তাদের কর্মসংস্থানের অভাব, নাকি শিক্ষার গলদ?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ এটা আমাদের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থার গলদ। আমাদের এখানে রাষ্ট্রীয় খাতকে দিনের পর দিন ছোট করে ফেলা হয়েছে। রাষ্ট্র কর্মসংস্থানের ব্যপারে কোনো দায়িত্বই নিচ্ছে না। বরং প্রাইভট খাতকে উদ্বুব্ধ করছে। এর ফলে ব্যক্তিখাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং বিত্তবান ধনীক শ্রেণী- তারা কী তাদের টাকা আমেরিকায় সেকেন্ড হোম তৈরির জন্য খরচ করবে, নাকি বেগম পাড়ায় বাড়ি কেনার জন্য খরচ করবে, নাকি সুইস ব্যংকে জমাবে, নাকি এখানে কলকারখানা তৈরী করবে, সেটা তাদের মর্জির উপর নির্ভর করছে। আমাদের মতো দেশে অর্থ পুঁজি হয়না। সেটা বিদেশে পাচার হয়ে যায় বা ভোগ বিলাসে ব্যয় হয়। সুশাসনের মাধ্যমে আমরা যদি অর্থকে পুঁজিতে রূপান্তর করে কর্মসংস্থার সৃষ্টি করতে পারি তাহলে বেকারত্বের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

প্রশ্ন: মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আপনি ডাকসুর প্রথম ভিপি। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়ে উঠা আন্দোলনকে আপনি কতটা সমর্থন করেন। এ নির্বাচনের ব্যপারে আপনি কতটুকু আশাবাদি?

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে যেমন লেখা থাকে কয় তারিখের মধ্যে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করা উচিত, তেমনি ছাত্র সংসদ নির্বাচন কয় তারিখের মধ্যে হতে হবে তাও লিখা থাকে। ছাত্র সংসদ কার্যক্রম শিক্ষা কার্যক্রমেরই একটা অংশ। বইয়ের পোকা বানানো শিক্ষার উদ্দেশ্য না। একজন শিক্ষার্থীকে সামগ্রিকভাবে সচেতন করে গড়ে তোলা, তার ভেতরের লুকায়িত সব প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলাই শিক্ষার উদ্দেশ্য। সেই যুক্তিতে পরীক্ষার তারিখ যেমন বাধ্যতামূলক তেমনি ছাত্র সংসদ নির্বাচনও বাধ্যতামূলক। খুবই অবাক করার বিষয়, ডাকসু নির্বাচনের ব্যপারে মাননীয় রাষ্ট্রপতি নিজে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও বটে। উচ্চতর আদালত ছয় মাসের ভেতরে ডাকসু নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ছয় মাস পার হয়ে গেছে। অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানালো আগামী বছর মার্চ মাসে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বছর বছর ইলেকশনের জন্য যদি একবছর আগে নোটিশ দিতে হয়, তাহলে কয় বছর পর পর নির্বাচন হবে?

প্রশ্ন: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমঃ একুশে পরিবারের প্রতি শুভ কামনা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর