ঝিনাইদহে ‘দুদুলতা’ ধানের আবাদ বৃদ্ধি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক দুদু মিয়ার উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল রোগবালাই-সহিষ্ণু ‘দুদুলতা’ জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর নিজ উদ্যোগে কৃষক দুদুমিয়া ধানের বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় এ বছর ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও ফলনও বাম্পার হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন। জানা যায়, ২০১২ সালে সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক দুদু মিয়া সুবললতা ধানের মধ্যে নতুন জাতের ধানের তিনটি গোছা আবিষ্কার করেন। প্রাথমিকভাবে দুই বছর পরিচর্যার পর ওই ধানের বীজ তৈরি করে নিজের জমিতে আবাদ শুরু করেন তিনি।

রোগবালাই-সহিষ্ণু ওই ধানের জাতটি উচ্চতায় খাটো হওয়ার কারণে ঝড় বা বাতাসে হেলে পড়ে না। পোকামাকড়ের আক্রমণও হয় কম। গত ২০১৭ সালে দুদু মিয়া তিন বিঘা জমিতে ১০০ মণ ধান উৎপাদন করেন। এ বছরও ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ‘নতুন জাতের এ ধানের প্রতিটি শিষে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০টি পর্যন্ত পুষ্ট ধান হচ্ছে; যা অন্যান্য ধানের শিষের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। ধানগাছের উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়ে না। এছাড়া এ ধানে রোগবালাই নেই বললেই চলে। এ ধানের গোছায় চিটা হয় না, তাই ফলন ভালো হচ্ছে। ধান থেকে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে, তা দেখতে অনেকটা বেগুনের বিচির মতো। স্বাদও ভালো।

দামও ভালো পাওয়া যায়।’ গত বছরের সাফল্যের পর এবছর ধানের আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষক দুদু মিয়া বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ সরবরাহ করেছেন। এই মৌসুমে ওসব জমিতে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, নতুন ধানের জাতের উদ্ভাবক কৃষক দুদু মিয়াকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ধান উৎপাদনে সার, সেচ, আগাছা দমনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়বলী আমাদের তত্বাবধানে হচ্ছে। ধানটি দেখে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এবারও ধানটির ফলন গতবারের মত আশানুরূপ হবে।

জাতটির চাল চিকন, ভাত খেতে সুস্বাদু, ধানের বাজার মূল্যে অপেক্ষাকৃত বেশি, ফলনও ভালো। এ প্রেক্ষিতে এ জাতের ধানটি নিকট ভবিষ্যতে দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি। এ ব্যাপারে কৃষক এমদাদুল হক দুদু মিয়া বলেন, গত বছর ধানের ফলন ভালো পেয়েছিলাম। এ ধান ঝিনাইদহের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমি এ বছর ১ হাজার কেজি ধানের বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছি। জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক দুদুলতা ধানের আবাদ করছেন। আমি আশা করছি তারাও আমার মত ফলন পাবেন। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে আমার কাছে অগ্রিম বীজের চাহিদা জানিয়েছেন। কাজেই এ বছরের তুলনায় আগামী বছর এ ধানের আবাদ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর