পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া ১৫জনকে ফুল-মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা ইটনা থানার ওসি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ইটনা উপজেলার বাসিন্দা ১৫ জন নির্বাচিত হয়েছেন। পুলিশের কনস্টেবল পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই ১৫জনকে অভিনব আয়োজনের মাধ্যমে সংবর্ধনা দিয়েছেন ইটনা থানার ওসি মোঃ আবদুল মালেক। সদ্য নিয়োগ পাওয়া এসব পুলিশ সদস্যদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেন ওসি মোঃ আবদুল মালেক।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ইটনা থানা প্রাঙ্গণে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরা ছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মশিউর রহমান খান। ইটনা থানার ওসি মোঃ আবদুল মালেক এর ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ইটনা থানা ওসি’র এমন আন্তরিকতা, সৌহার্দ্য ও শুভেচ্ছায় অভিভুত সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরা। তারা জানান, পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে অনেকের কাছ থেকে তারা নানা ধরনের হয়রানির কথা শুনেছেন। তবে তাদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। পুলিশ কর্মকর্তারা কোন ধরনের টাকা-পয়সা ও হয়রানি ছাড়াই তাদের ভেরিফিকেশন করে দিয়েছেন। এরপর আবার ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পর মিষ্টি খাইয়েছেন। এটা ব্যতিক্রম একটি ঘটনা।

কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া ১৫জনের মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন জান্নাতুন নেছা। উপজেলার চৌগাঙ্গার এই মেয়ে জানান, তার বাবা বেঁচে নেই। চরম দারিদ্রতর মধ্যে কষ্ট করে তাকে লেখাপড়া করতে হয়েছে। স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তিনি পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন। ফেরিফিকেশনের জন্য থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কোন হয়রানির শিকার তাকে হতে হয়নি। এখন আবার তাকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে পুলিশ পরিবারে বরণ করে নেয়া হলো। এতটা আনন্দের উপলক্ষ জীবনে তার আর আসেনি উল্লেখ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জান্নাতুন নেসা।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপজেলার থানেশ্বর গ্রামের হৃদয় খান বিশাল জানান, এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া তার মুখে হাসি এনে দিয়েছে। এখন থানা পুলিশের এমন উষ্ণ সংবর্ধনায় তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।

এ ধরনের সংবর্ধনা আয়োজনের ব্যাপারে ইটনা থানার ওসি মোঃ আবদুল মালেক জানান, পুলিশের সম্পর্কে মানুষের অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। টাকা ছাড়া স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ, টাকা ও হয়রানি ছাড়া পুলিশ ভেরিফিকেশন, এসব পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা বদলে দেবে। এছাড়া যারা এভাবে নিয়োগ পেলো, তাদেরও যে দেশকে এভাবে স্বচ্ছতার সাথে সেবা দিতে হবে, এ বিষয়টি তাদের বিবেককে যেন নাড়া দেয়, এজন্যে এমন আয়োজন করা হয়েছে।

ইটনা থানার ওসি মোঃ আবদুল মালেকের এমন ব্যতিক্রমি উদ্যোগকে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মশিউর রহমান খান নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের সততা ও আন্তরিকতা সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর