মৃত্যু পথযাত্রী কিশোর জাহাঙ্গীর বাঁচতে চায়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোমরে টিউমারের কারণে ১৬ বছরের কিশোর জাহাঙ্গীর আলম হাঁটা-চলা করতে পারছে না। এমনকি ঘর থেকে টয়লেটেও যেতে হয় তাকে বাবা-মায়ের কাঁধ চেপে। ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার বাউরা পাবলিক দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তার অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পারেনি শুধু অসুস্থতার কারণে।

জাহাঙ্গীরের ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে সে তাদের এলাকার বড় একজন মানুষ হবে। সবাই যেন তাকে ও তার পরিবারকে মূল্যায়ন করে এ চিন্তা করেই অসুস্থ অবস্থায় থেকেও পড়ালেখা চালিয়ে আসছিল সে। কিন্তু কৈশোরেই ভেঙে যেতে বসেছে তার সেই স্বপ্ন।

জাহাঙ্গীর আলম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া কামারটারী গ্রামের দিনমজুর আনার হোসেন ও জামিনা খাতুনের ৪ ছেলের মধ্যে সবার বড়।

অসুস্থতার কারণে দুই বছর ধরে বাড়ির অন্ধকার ঘরটিতে কাটছে তার দিন। যখনই বিছানা থেকে উঠার প্রয়োজন হয় বাবা-মায়ের সহযোগিতা নিয়ে প্রয়োজন সেরে ফেলে। অথচ দিনমজুর বাবা-মা তার চিকিৎসা করাতে পারছে না।

নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জাহাঙ্গীর। এলাকাবাসীর কাছে ধার-দেনা করে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নেয়া হলে চিকিৎসক বলেন, তার মেরুদণ্ডে টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে। এ কথা শুনেই বাবা আনার হোসেন বাড়ি-ভিটের জমি ও টিনের ঘরে বিক্রি করে ছেলের অপারেশন করান। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন আনার হোসেন। অপারেশনের কিছুদিন যেতে না যেতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে জাহাঙ্গীর আলম। আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পরে তার কোমড়ে টিউমার।

রংপুর মেডিকেল কলেজের অনকোলজিস্ট বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. স্বপন কুমার নাথ জানিয়েছেন, কোমরের টিউমার অপারেশন করতে সব মিলে প্রায় এক লাখ টাকার প্রয়োজন।

জাহাঙ্গীর জানায়, নড়াচড়া করতে খুবই কষ্ট, আগের মতো হাঁটতে পারি না। খুব ইচ্ছে ছিল পড়াশোনাটা চালিয়ে যাব। এখন বুঝি আর সম্ভব না।

জাহাঙ্গীর আলমের বাবা আনার হোসেন  বলেন, ছেলের চিকিৎসা করতে সব শেষ করে ফেলেছি। তাই আজ স্বামী-স্ত্রী দিনমজুরি করছি। জানি না তাকে সুস্থ করে তুলতে পারব কি-না।

বাউরা পাবলিক দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজার রহমান বলেন, জাহাঙ্গীরের এবার পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু অসুস্থতার কারণে দিতে পারেনি। সবাই সহযোগিতা করলে ছেলেটি হয়তো একদিন ভালো কিছু করবে। না হলে অকালেই ঝরে যাবে একটি ভবিষ্যৎ।

জাহাঙ্গীরকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা : আনার হোসেন, সঞ্চয়ী হিসাব নং-এসবি ৯৯৯৬, বড়খাতা রূপালী ব্যাংক শাখা, হাতীবান্ধা। এছাড়াও সহযোগিতা পাঠাতে পারেন ০১৭০৭-৪২০৭৩০ বিকাশ নম্বরে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর