কিশোরগঞ্জের ভৈরবে টানা ধর্মঘটে বিপাকে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গতকাল রোববার থেকে চলা টানা ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। স্কুলে এসে শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ দেখে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে তারা। এতে করে শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুবায়াত খানম, বিদিশা রশিদ, রানা মাহমুদ, বিল্লাল মিয়া ও আনোয়ার হোসেন জানান, বছরের শুরুতে পাঠদানে এই ধর্মঘট তাদের ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

তারা শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জানান। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তোফায়েল মিয়া, প্রিয়া দাস, রাজিব আহমেদ ও মুন্নি ভূঁইয়া জানান, চলতি বছরের জেএসসি পরীক্ষার্থী তারা। এসএসসি পরীক্ষাসহ বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান, পিকনিক ইত্যাদি কারণে চলতি তিন মাসে তেমন কোনো ক্লাস হয়নি তাদের। এখন শুরু হয়েছে শিক্ষকদের ধর্মঘট। এতে করে সব চেয়ে বেশী ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।

ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, ভৈরব উপজেলা শাখার সভাপতি ও স্থানীয় ইউসুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. পিয়ার হোসেন জানান, ‘ধর্মঘটের ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এটি শতভাগ সত্য। কিন্তু আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে।বিগত ৯ বছর আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহু দেন-দরবার করেছি। কিন্তু ফলাফল শূন্য হয়েছে। এখন সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।

গতকাল রোববার থেকে নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভৈরবের ১৯টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রেখেছেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ভৈরব উপজেলা শাখার উদ্যোগে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের দাবির পক্ষে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ প্রতিবাদ সভা পালন করেন।

শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটি আহুত ১৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশকে সফল করতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণসহ উত্থাপিত ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী সংগঠনের নেওয়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রোববার থেকে ক্লাস বর্জন করে এইসব কর্মসূচি পালন করছেন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা।

শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ, শিক্ষা ক্ষেত্রের বেতন-ভাতাদির বৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি-বেসরকারি দ্বৈতনীতি পরিহার, শতকরা ৬ ভাগ প্রবৃদ্ধি, শতকরা ২০ ভাগ বৈশাখি ভাতা প্রদান, বাড়ি ভাড়া বাবদ দেওয়া ৫০০টাকার পরিবর্তে মানসম্মত ভাড়া প্রদান, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদানসহ ১১ দফা দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষকরা তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর