রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের আহ্বান নোবেলজয়ী তিন নারীর

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবিলম্বে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে অবিলম্বে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী অং সান সুচিকে নীরবতা ভেঙে এ বিষয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী অপর তিন নারী ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান ও যুক্তরাজ্যের ম্যারেইড ম্যাকগুয়ার। আজ বুধবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা জানান।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের ছয়মাস পূর্তি উপলক্ষে নোবেলজয়ী তিন নারী বাংলাদেশ সফরে আসেন। তারা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সুচিকে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করে সেখানকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তারা রোহিঙ্গা গণহত্যা, এ বিষয়ে সুচির নীরবতা, সুচিসহ মিয়ানমারের অন্য সামরিক কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন।

এর আগে সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন করেন নোবেল জয়ী নর্দান আয়ারল্যান্ডের ম্যারিড ম্যাগুয়ের, ইরানের শিরিন এবাদি ও ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান।

ম্যারিড ম্যাগুয়ের সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যা দেখেছি তাতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো কীভাবে নিরব রয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতায় বিষ্ময় প্রকাশ করেন তিনি। মানবিক কারণে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন ম্যারিড ম্যাগুয়ের। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘কাইন্ড মাদার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া বর্বরতার দায় অবশ্যই মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইয়েমেনের সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের খবর যতটুকু প্রচারিত হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি ঘটনা ঘটেছে সেখানে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনীর আচারণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা জাতিগত নিধনের পরিকল্পিত সরকারি নীতি।

তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।  রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময়ে একশ’ উদ্বাস্তু নারীর সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে কারমান বলেন, ওই নারীরা মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

এতিম শিশুদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অধিকাংশ শিশুর অভিভাবককে তারা হত্যা করেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার জন্য দায়ীদের আইনের আওয়তার আনার আহ্বান জানান ইরানের শিরিন এবাদি।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযানের পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর