বাদামের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের পলি দো-আঁশ মাটিতে এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম জাতের চিনা বাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রতিটি লতানো বাদাম গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালি রঙের বাদাম। এতে চলতি মৌসুমে বাদামের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে।

এবছর গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের খাটিয়ামারি, চন্দনস্বর, কাউয়া বাঁধা, চিকিরপটল, তালতলা, এরেন্ডাবারী ইউনিয়নের বুলবুলির চর, জিগাবাড়ি, হরিচন্ডি, ফুলছড়ি ইউনিয়নের খোলাবাড়ি, বাজে ফুলছড়ি, বেলুয়াবাড়ি, টেংগারাকান্দি, গজারিয়ার ইউনিয়নের জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার হাড়ভাঙ্গা, রসুলপুর, সাতারকান্দির চরে বাদামের চাষ করা হয়।

এছাড়াও সদর উপজেলার কামারজানির চর, সাঘাটা উপজেলার কয়েকটি চর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি চরে চিনা বাদাম চাষ করা হয়েছে।

কামারজানি ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়া চরের বাদাম চাষী হাইবুর মিয়া জানান, এ বছর কোনো রোগ বালাই না থাকায় বাদামের গাছ নষ্ট হয়নি। তাই আগাম জাতের চিনা বাদাম অনেক ভালো হয়েছে। প্রতি কেজি কাঁচা বাদাম পাইকারি দরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। একই তথ্য জানালেন দেলুয়াবাড়ী চরের কৃষক আবদুর রাজ্জাক।

ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবারী ইউনিয়নের বুলবুলির চরের বাদাম চাষী একরামুল ইসলাম বলেন, অন্যবছরের তুলনায় এ বছর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাদাম অনেক ভালো হয়েছে। দাম থাকলে বাদাম চাষে লাভের আশা করা যায়। তবে কিছু কিছু জমিতে বাদামের দাউদ রোগ লক্ষ্য করা গেছে সেসব জমির বাদামের দাম তুলনা মূলক একটু কম হবে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধার সাত উপজেলার নদীবেষ্টিত চর এলাকায় ৮৭৭ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৯০০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদামসহ বিভিন্ন জাতের বাদাম চাষ করা হয়। চরের বালুতে প্রতি হেক্টর জমিতে ধান ৩০-৩২ মণ হলেও বাদাম হচ্ছে ১৫-১৮ মণ। আর প্রতিমণ কাঁচা বাদাম ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার বাদাম ব্যবসায়ীরা এখন ফুলছড়ির চর থেকেই বাদাম কিনছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. কা. মো. রুহুল আমীন বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের চিনা বাদাম তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে চরাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার কৃষক পরিবারে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। আশা করা যায় আগামিতে আরো ভালো বাদাশের চাষ করবে চরাঞ্চলের চাষিরা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর