ছাত্র ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনায় এমাজউদ্দিন আহমেদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন তার শিক্ষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে বলেছেন অফিসে ও ঘরে বসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে। সে আমার ছাত্র। আমি এই তরুণকে কেমন করে বুঝাবো যে ঘরে বসে আন্দোলন হয় না। তবে এই মুহূর্তে তার কথা শোনাই ভালো। কিন্তু অপেক্ষা বেশি দিন করতে হবে না।’

সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক গোলটেবিল আলোচনায় এমাজউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং সংকটে আগামী জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে ‘স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন’ নামের বিএনপিপন্থি একটি সংগঠন।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ঘরে বা কার্যালয়ে করার পরামর্শ দিয়ে রবিবার একটি অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা (বিএনপি) শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসূচিকে সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে কোনো সভা-সমাবেশ করা যাবে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন। আপনারা যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন তাহলে ঘরে-অফিসে করুন, রাস্তায় কেন? জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন কেন?’

বর্তমান সময়ে বিএনপি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ঐক্যবদ্ধ  দাবি করে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী এমাজউদ্দিন বলেন, ‘সরকার ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিলে বিএনপি ভেঙে যাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। বিএনপি এখন ভয়ঙ্করভাবে ঐক্যবদ্ধ। এই মুহূর্তে বিএনপি যেকোনো সময়ের থেকে অত্যন্ত সংঘবদ্ধ। তাদরেকে এখন সংগ্রামী দল হিসেবে প্রকাশ হওয়া দরকার। এভাবেই চলুক, তাহলেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আগামী নির্বাচন জয়লাভ করা সম্ভব।’

বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভয়ঙ্করভাবে ধ্বংস হয়েছে জানিয়ে এমাজউদ্দিন বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে এই সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। সাধারণ মানুষ পরিবর্তন চায়, সবাই পরিবর্তনের পক্ষে। তবে এখনই উত্তেজিত হওয়ার সময় আসেনি।’

এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘পৃথিবীতে ২০৩ রাষ্ট্রের মধ্যে ১৬৫টিতে সংসদীয় ব্যবস্থা। তারা যেভাবে সংসদ ভেঙে নির্বাচন করে, সেভাবে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ সংসদ ভেঙে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সংসদ ভেঙে দেওয়াই আমাদের প্রথম দাবি।’

এমাজউদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনের আবহাওয়া তৈরি করতে হবে। নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি না করলে কিছুতে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। আমরা কিন্তু একা নই, বহু সংস্থা, বহু রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে আছে। সময়ই বলে দেবে আমাদের কী করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের আরও শান্ত থেকে আন্দোলন করতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, শহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর