আমার তিন সন্তান অসুস্থ, টাকার অভাবে মিলছে না চিকিৎসা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফাস্টফুড বা চাইনিজ হোটেলে এক বেলার খাবার খেতে অনেকেই লক্ষ টাকা খরচ করেন। অনেকেই শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিলাস বহুল গাড়ি, আলিসান বাড়ি নির্মাণ করছেন। অনেকেই কঠিন রোগ তো দূরের কথা তাদের সামান্য মাথা গরম বা আঙুলে ব্যথা হলে বিদেশ গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসায় বিলাসিতা করেন। অথচ চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, অর্থাভাবে দীর্ঘদিন যাবত কঠিন রোগে আক্রান্ত একই পরিবারের ৩ জনকে ডাক্তার দেখানো পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। এই পরিবারটির খোঁজ খবর রাখার যেন কেউ নেই। অসহায় এই পরিবারটির সন্ধান মিলেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে।

সরেজমিনে, হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়ন (মিলন বাজারের পাশে) পূর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকার মৃত আমানতুল্লাহর ছেলে আজিমউদ্দিন (৭৫)। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আগে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে কোন রকম সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু বয়স বেশি হওয়ায় এখন আর কেউ তাকে কাজে নেন না। এখন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বড় ছেলে আবদুর রাজ্জাক মিন্টু (৪০)।

সে ঢাকায় ভাড়ায় রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়। ছোট ছেলে আশরাফুল আলম (৩৩) দীর্ঘদিন যাবত মাথার সমস্যায় ভুগছে। বড় ছেলে রিক্সাচালক আবদুর রাজ্জাক মিন্টুর দুই ছেলে সাইফুর রহমান (১৩) জন্ম থেকে সব সময় চিৎকার করে, ঘাড় নারে, মাটিতে গড়াগড়ি করে, কিছুই খেতে চায়না। আর এক ছেলে রহমত (৫) চোখের সমস্যায় এক দিকে তাকিয়ে থাকে। ৩ শতক জমির উপর জীর্ণশীর্ণ ভাঙা চালায় পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে তাদের বসবাস। পায়নি কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানও রাখেনা তাদের কোন খোঁজ খবর।

অসুস্থ ঐ ৩ জনের রোগ ও চিকিৎসার বিষয় জানতে চাইলে বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘বাবারে আমাদের বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই। এতো কষ্টের চাইতে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। অসুস্থ এই ৩ সন্তানের চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, ডাক্তারকে ভিজিট দিব সে টাকাই তো আমার নেই। বড় ছেলে মিন্টু অন্যের রিক্সা ভাড়ায় চালিয়ে সামান্য যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসারই চলেনা। পড়নের কাপড় নেই। এরপরেও আমি তাদের চিকিৎসা করব কিভাবে ?’

বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন সমাজের বিত্তবানদের কাছে আকুল আবেদন করে জানান, ‘অসুস্থ এই ৩ সন্তানের চিকিৎসায় কেউ এগিয়ে আসলে তার পরিবার হয়ত একটু আশার আলো দেখতে পেত।’

বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাসুম আলী জানান, ওই পরিবারটিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিন্তু পারিবারের ৩ সন্তান শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছে ফলে তাদের চিকৎসার জন্য সরকার বা বিত্তবানদের এগিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন।

যোগাযোগ-০১৭৮৮-১৩৩৬২৩ (আজিম উদ্দিন), প্রতিবেশী মিজানুর-০১৭৩৭-৬৮২৫৬০ অথবা নুরনবী সরকার, ০১৭৩৭-৩২১৮০১।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর