মাঠে জুড়ে সরিষার হলুদ হাসি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নড়াইল জেলার বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠে যেন বসেছে হলুদের মেলা! হলুদ রং মেখে প্রকৃতি নিজেকে সাজিয়েছে অপরূপা রূপে। সেই সঙ্গে চারদিকে বইছে মৌ মৌ সুবাস। আর এসব আয়োজনের পাশাপাশি কৃষকের চোখমুখে খুশির ঝলকানি। অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্যার কারণে নড়াইলে এবার সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ফুলে ফুলে সরিষা ক্ষেত ভরে ওঠায় খুশি কৃষক-কৃষাণীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।

সদর উপজেলার সিবানন্দপুর গ্রামের কৃষক ইশারত শেখ বলেন, তিনি প্রতি বছর সরিষার আবাদ করেন। এবছর তিনি প্রায় দেড় একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এ বছর সরিষা ভালো হয়েছে। ফুলে ফুলে তার জমি ভরে গেছে, কিছুদিন পরে ফুলে দানা (সরিষা) আসবে। গত বছরের থেকে চলতি বছর ভালো ফলন পাবে বলে আশা করছেন তিনি।

কালিয়া উপজেলার নোয়াগ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া জানান, তিনি প্রায় ৮ বছর যাবৎ সরিষার আবাদ করেন। এবছরও তিনি ৩২ শতক জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। স্থানীয় ভাবে সরিষার অনেক চাহিদা রয়েছে, তেলের পাশাপাশি সরিষাদানা বেটে সরিষা ইলিশসহ বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়।

সরিষাক্ষেত দেখতে আসা দর্শনার্থী কলেজ ছাত্রী শারমীন বলেন, সরিষা ক্ষেতে আসলে মনটা আনন্দে ভরে উঠে। সরিষার ফুলে খুব ঘ্রাণ। সুজলা-সুফলা বাংলাদেশের অপরূপ রুপ। শুধু দেশের মানুষকেই নয়, বিশ্বের মানুষকেও আকৃষ্ট করে। তারই ধারাবাকিতায় কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের প্রাপ্তি এ সরিষাক্ষেত, এ কৃষি ফসল। আর তাই বাংলার প্রকৃতির টানে প্রকৃতিপ্রেমীরা সরিষাক্ষেতে ঘুরতে আসেন।

আমাদা আর্দশ কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অচিন্ত্য লস্কর বলেন,সরিষা ক্ষেতে সৌন্দর্যেও পাশাপাশি সারাক্ষণ মৌমাছির গুনগুন লেগেই থাকে। প্রায় দুমাস ধরে সরিষার ফুল থেকে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। সরিষার মধুর একটি আলাদা চাহিদা রয়েছে। এ মধুর পুষ্টিগুণ যেমন বেশি, তেমনি স্বাদেও একেবারেই ভিন্ন রকম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, চলতি মৌসুমে নড়াইলে জেলায় ৫ হাজার ৮’শ ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। নড়াইলের মাটি সরিষা চাষের উপযোগী। এখানকার কৃষকেরা বিভিন্ন প্রকার সরিষা আবাদ করে থাকলেও, বারি সরিষা-৯, বারি সরিষা-১১, বারি সরিষা-১৪ ও বারি সরিষা-১৫ বেশি চাষাবাদ করেছেন। সরিষা লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষকেরা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এর তেল ও খৈল এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া সরিষার পাতা ও ফুল মাটিতে পচে জমির উর্বরতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন এ কৃষি কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর