আগামী বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম শুরু হবে

সপ্তম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনাকে সামনে রেখে আগামী বুধবার শুরু হবে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ)-২০১৮।

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ ফোরামের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ফোরামে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোই প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সোমবার শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিডিএফ আয়োজনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এ সময় ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আজমসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বিনিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছি। বিশেষ করে, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমরা শিগগিরই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাব। আমাগী মার্চ মাসে জাতিসংঘের একটি সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতি খুব ভালোর দিকে যাচ্ছে।

চীনের সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, দাতা হিসেবে চীন নতুন। তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে এটা কেটে যাবে। চীনের অর্থায়নে ইতোমধ্যে চারটি প্রকল্পের ঋণচুক্তি হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী জানান, চীনের অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ অনেক দূর এগোলেও এটি এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে। যে বিদেশি সংস্থাকে কাজের টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল, তারা শেষ মুহূর্তে এসে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করায় কাজটি এগোয়নি।

বিডিএফ সম্মেলনে ভারত-চীনের দৃশ্যমান অংশগ্রহণ না থাকার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ইআরডি সচিব বলেন, সম্মেলনে পার্টনার হিসেবে উন্নয়ন সহযোগীদের সবাই সম্পৃক্ত আছেন। ভারতের হাইকমিশন ও চীনের দূতাবাস এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে।

এসডিজি অর্জনে অর্থায়নকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে দাতাদের কাছ থেকে খুব বেশি অর্থ পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না। কারণ, এমডিজির সময়ও তারা যে পরিমাণে প্রতিশ্রতি দিয়েছিল তার বাস্তবায়ন করেনি। এক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব সক্ষমতার ওপর জোর দিতে হবে এবং আমরা এটি পারব। আমরা ইতোমধ্যে এমডিজিতে সাফল্য অর্জন করে দেখিয়ে দিয়েছি।

একই প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে ৯২৮ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ আসবে বিদেশি বিনিয়োগ থেকে, যার ১০ শতাংশ আবার এফডিআই অর্থাৎ মাত্র ৫ শতাংশ অর্থায়ন আসবে ওডিএ থেকে। দাতাদের সাথে এ বিষয়ে বিডিএফ ফোরামে আলোচনা হবে।

আয়োজকরা জানান, আগামী ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি এই ফোরাম হবে। ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের মহাপরিচালক সুলেইমান জাসির আল হারবিশ, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেট ডিক্সন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা ওয়েন চাই ঝ্যাং, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাপরিচালক মিরু মাসুজিমা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিনিধিরা ফোরামে অংশ নেবেন।

ফোরামে আটটি কর্মঅধিবেশন হবে। এতে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক নিয়োগ, বেসরকারি খাতের আরো বেশি অংশগ্রহণ, মানবসম্পদের উন্নয়ন, বৈষম্য রোধ, নারী নির্যাতন রোধ, নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং টেকসই উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে। আলাদা আলাদা সেশনে উঠে আসবে বিশেষজ্ঞ মতামত।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর