তুমুল জনপ্রিয়তার সময় প্রেমিকাকে বিয়ে করেছিলেন রিয়াজ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সালমান শাহের পর রোমান্টিক নায়ক হিসেবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অল্প দিনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন রিয়াজ। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি নাটক, উপস্থাপনা ও বিজ্ঞাপনে সমান দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২৬ অক্টোবর ১৯৭২ সালে ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন রিয়াজ। তার প্রকৃত নাম রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সিদ্দিক।

রিয়াজের জন্ম ফরিদপুর হলেও তার পৈতৃক বাস যশোর জেলায়। বাবা মৃত জাইনুদ্দিন আহমেদ সিদ্দিক একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন ও মা আরজুমান আরা বেগম গৃহিণী। রিয়াজের বড় ভাই রাইজুদ্দিন আহমেদ সিদ্দিক ও ছয় বোন। রিয়াজের চাচাতো বোন সূচন্দা, ববিতা ও চম্পা।

রিয়াজ ২০০৭ সালে বিনোদন বিচিত্রার ফটো সুন্দরী ও মডেল মুশফিকা তিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ে মোটেই সহজ ছিল না। রিয়াজ ও তিনার পরিচয় সূত্র হিসেবে কাজ করেছে রিয়াজের ‘হৃদয়ের কথা’ সিনেমাটি। হৃদয়ের কথা সিনেমার একটি গানের নাচের দৃশ্যে প্রথম পরিচয় হয় তাদের। সে সময় রিয়াজ প্রধান নায়ক হলেও তিনা ছিলেন সাধারণ একজন সহকর্মী।

সেই গানের একটি দৃশ্য ছিল তিনা ঘুরে এসে নিচে বসে রিয়াজের দিকে হাত বাড়িয়ে দেবেন, আর রিয়াজ তার হাত ধরে তাকে টেনে তুলবেন। শুটিং শুরু হওয়ার পর তিনা রিয়াজের দিকে তার হাতটি বাড়িয়ে দেন ও রিয়াজ তার হাতটি ধরে তাকে টেনে তোলার জন্য। ঠিক এই সময়টাতেই ঘটে যায় অঘটন। পুরো শুটিং ইউনিটের সামনে রিয়াজ তিনাকে টেনে না তুলে বেশ কিছুক্ষণ তিনার হাত ধরে তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

সেই গানের শুটিংয়ের পর থেকেই রিয়াজের মনে বাসা বেঁধে নেয় তিনা। তবে সে সময়ে তিনার মনে বাসা বাঁধতে পারেননি রিয়াজ। তিনার মনে রিয়াজের বাসা বাঁধতে আরও অনেকটা সময় লেগেছে। সেদিনের শুটিং শেষে যে যার বাসায় চলে যান। রিয়াজের মনের ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনা। মনে মনে তিনার সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো একটা মাধ্যম খুঁজছিলেন রিয়াজ।

এক সময় সেই ছবির এক কর্মকর্তাই রিয়াজকে ফোন দেন। রিয়াজ কৌশলে সেই কর্মকর্তার মাধ্যমে তিনাকে ফোন করান। এভাবেই দুজনের ফোন নম্বর আদান-প্রদান হয়। এরপর বিভিন্ন সময় শুটিং বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও উপদেশের জন্য তিনা রিয়াজকে ফোন দিতে থাকেন এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাদের দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা। শুরুতে মোবাইলে রিয়াজ তৃনাকে শুটিং বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ দিলেও এক সময় তা অন্য দিকে মোড় নেয়।

এসময় তাদের কথাবলার বিষয় হয়ে যায় – কোথায় আছ, কি করছ, খেয়েছো কিনা ইত্যাদি। তবে কেউ কারো কাছে সরাসরি ধরা দিচ্ছেন না। এভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর রিয়াজই প্রথম তিনাকে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেন। সে সময় তিনা শুটিংয়ের জন্য বিদেশে যাচ্ছিলেন। এয়ারপোর্টে থাকাকালীন রিয়াজ তাকে ফোনে প্রস্তাবটি করেন। সে সময় তিনা কোনো উত্তর দেননি। তিনার উত্তর পাওয়ার জন্য রিয়াজকে ২০ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। যেদিন বিদেশ থেকে দেশে ফেরেন সেদিন বিকাল বেলায় অবশেষে তিনা রিয়াজের প্রস্তাবে সায় দেন।

এবার বাড়িতে বুঝানোর পালা। দুজনই একসময় বাড়িতে বোঝাতে সক্ষম হন। রিয়াজের বাড়ি থেকে তিনাদের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়। তবে উভয় পরিবারের মধ্যে সবকিছু ঠিক থাকলেও কোনো এক কারণে তদের বিয়ের বিষয়টি ঠিকভাবে এগোচ্ছিল না। দুই পরিবারের টুকটাক মতের অমিলের কারণে একসময় ভেঙেই যেতে বসেছিল তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক।

তারা দুজন এরকম সিদ্ধান্তও নিয়ে নিয়েছিলেন। প্রায় ৬ মাসের মতো তাদের দুজনের মধ্যে কোনো যোগাযোগ ছিল না। ৬ মাস পর তিনার আগ্রহের কারণে আবার জোড়া লাগে তাদের ভাঙা ভালোবাসার সম্পর্কের। তাদের দুজনের দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় প্রায় দেড় বছর পর দুই পরিবারের মতের মিল অবশেষে হয়। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাজে তাদের বিয়ের সানাই।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর